মন্দার:
এমন সেজেছ কেন তুমি?
নীলা:
সেজেছি বুঝি?
কেবল অঙ্গে জড়িয়েছি শাড়ি
ঘন নীল, একটু সবুজ পাড়ের মিশেল
তুমি আমাকে সমুদ্র ভেবেছ নাকি?
মন্দার:
হেসো না
গলায় অমন পদ্ম হার
কপালে জল রং এর টিপ
খোঁপায় পাতা শুদ্ধ কদম
নগ্ন পদযুগলে টুপ টুপ বৃষ্টির নকশার পা-বাহার,
নাকে প্রথম বৃষ্টির দূর্দান্ত ফোঁটার মত নাকফুল
এসব বুঝি কিছু নয়?
ভাসাতে চাও? আমাকে নি:স্ব করার
কিছুই রাখলে না বাকী!
নীলা:
বড্ড অবুঝ তুমি
এত উতলা হলে চলে?
কেবলই ভেসে যেতে চাও--
আমি কি শুধু ভাসিয়ে নিয়ে বেড়াই?
রাখিনা বুকের আলিঙ্গনে?
বলি, তোমার অমন শুষ্ক হৃদয়
কানায় কানায় কে ভরালো?
মন্দার:
একই অঙ্গে এত রূপ তোমার
বড্ড ভয় হয়,কখন একেবারে ভাসিয়ে দাও--
যদি তোমার ছবি আঁকি
তাহলে তুমি-- মেঘ রোদে মাখামাখি প্রখর সূর্যমুখি
আবার কখনও হেঁয়ালী বৃষ্টি, হঠাৎ এসেই হঠাৎ নিরুদ্দেশ।
আমি যখন চাতক-- তুমি বৃষ্টি বুকে
কামুক মেঘের অযথাই ওড়াউড়ি
ভালবাসলে, জলের ভেতর স্থির
কলমী ফুলে- ঘন সবুজ।
ছুঁয়ে দিলে লাল পদ্ম।
আবার না চাইতেই, কাল অমন ঢল ঢল
আষাঢ়ের গাঢ় বৃষ্টির মত
তুমুল ভালোবাসায়
আমায় কে জড়ালো?
নীলা:
তুমি কি চাও, আমি বৃষ্টিহীন আকাশ হই?
অথবা জল হৃদয়ে একফোঁটা জল
মিলিয়ে যাই-- নেই আলোড়ন?
কিম্বা ভেজা গন্ধে গুমোট বাতাস
বৃষ্টিহীন মরুভূমি
রাগী মেঘ, দাপিয়ে বেড়াই?
মন্দার:
সামর্থ্য থাকলে অভিমান শব্দটা শুধু তোমার
জন্যই কিনে ফেলতাম হে দেবী!
ওটা শুধু তোমাকেই মানায়।
তোমাকে এখন কেমন লাগছে, বলবো?
ঝুম বৃষ্টির পরে, এক টুকরো রংধনুর মত।
তোমার চোখের তারায় প্রগাঢ় বৃষ্টি শেষের উজ্জ্বল আলোর মাখামাখি
এমন করে তাকালে----
না ভেসে উপায় আছে বলো?
এটাই আমার নিয়তি, কি করে এড়াই?
নীলা:
রংধনু না ছাই!
বুঝি না ভেবেছ?
এ সব শুধু আমাকে ছোঁবার ছল।
মন্দার:
উঁহু হল না।
তুমি আমার বৃষ্টি ধোওয়া
নরম পলি- বুকের জমিন
বৃষ্টির গান-- মেঘ মল্লার
সব ভাসানো এক হৃদয়
তৃষ্ণার জল।