'মধুমঞ্জরী'ই কখনও মাধবীলতা, কখনও মাধুরীলতা। নাম নিয়ে কত যে কথা, কত যে বিভ্রান্তি। বিভ্রান্তি বলা ঠিক হবে না। যে, যে নামেই ডাকুক না কেনো ফুলের সৌন্দর্য কখনও ম্লান হবে না। সৌরভ সে ছড়াবেই। আসলে এর কোনো বাংলা নাম ছিলো না। তবুও শনাক্তিকরণের প্রয়োজন আছে বলেই শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ মধুমঞ্জরী লতা নামটি দিয়েছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের কবিতায় মধুমঞ্জরী-
'তব প্রাণে মোর ছিল যে প্রাণের প্রীতি
ওর কিশলয় রূপ নেবে সেই স্মৃতি,
মধুর গন্ধে আভাসিবে নিতি নিতি
সে মোর গোপন কথা।
অনেক কাহিনী যাবে যে সেদিন ভুলে,
স্মরণ চিত্ত যাবে উন্মুলে;
মোর দেওয়া নাম লেখা থাক ওর ফুলে
মধুমঞ্জরী লতা।
মধুমঞ্জরীর বৈজ্ঞানিক নাম- Quisqualis indica.
মধুমঞ্জরী কাষ্ঠল, পত্রমোচী, আরোহী উদ্ভিদ। বাংলায় হরগৌরী, মধুমালতি, লাল চামেলি নামেও পরিচিত। মধুমঞ্জরী প্রায় সারা দেশেই সহজলভ্য। তাজা ও বাসি ফুলে রঙের ভিন্নতাও এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাজা ফুলের রঙ সাদা, বাসি হলে লাল হয়।
পাতা একক, অখণ্ড, আয়তাকার-ভল্লাকার, ৬/৯ সেন্টিমিটার লম্বা, শিরা সামান্য রোমশ, বিন্যাস বিপ্রতীপ। ডালের আগায় বড় বড় ঝুলন্ত থোকায় সুগন্ধি, সাদা ও লাল রঙের ফুল ফোটে। বছরে কয়েক দফা ফুল ফোটে । ঘন সবুজ পাতার মাঝখানে ঝুলন্ত সাদা-লাল ফুল সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সন্ধ্যায় নতুন ফুল ফোটে আর হালকা সুবাস ছড়ায়। বসন্ত, গ্রীষ্ম ও বর্ষায় প্রচুর ফুল ফোটে।
দলনল প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা, পাপড়ি পাঁচটি, ফুলের বোঁটা লম্বা হয়। গোড়ার শিকড় থেকে চারা গজায়। সাধারণত কলমে চাষ হয়। এই উদ্ভিদটির আদি নিবাস মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া।
পুষ্প বাগিচা