বায়ার্নের স্বপ্নভঙ্গ করে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে রিয়াল

ফুটবল দুনিয়া May 9, 2024 163
বায়ার্নের স্বপ্নভঙ্গ করে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে রিয়াল

ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লীগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লীগের রুদ্ধশ্বাস লড়াইটি রিয়াল জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালের জয় ৪-৩ গোলে। বায়ার্নের মাঠে প্রথম লেগ ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়েছিল।


ডেভিসের সেই গোলের পর জোড়া গোলে রিয়ালের রুপকথার নায়ক হোসেলু।আর বায়ার্নের ট্র্যাজেডির হিরো? গোল পোস্টের নিচে এক যুগের বেশি ধরে আস্থার প্রতীক ম্যানুয়েল নয়ার।


অবিশ্বাস্য এ জয়ে রেকর্ড ১৮ তম বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে উঠল স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। অন্যদিকে বায়ার্নের এই হারে সম্ভাবনা জাগিয়েও এবার আর হচ্ছেনা 'অল জার্মান ফাইনাল'। আগামী ১ জুন ওয়েম্বলিতে ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।


এই ম্যাচে রিয়ালদের আধিপত্য ছিল শুরু থেকেই। প্রায় ৬০ শতাংশ গোলের উদ্দেশ্যে তাদের ১৯টি শটের মধ্যে সাতটি ছিল লক্ষ্যে।অন্যদিকে ম্যাচের বেশিরভাগ সময় চাপে থাকা বায়ার্ন আট শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে পাঁচটি।


প্রথমার্ধে এদিন সেভাবে সুবিধা করতে পারেনি বায়ার্ন।আক্রমাণাত্মক ভাবে শুরু করা রিয়াল এগিয়ে যেতে পারত ম্যাচের ষষ্ট মিনিটেই।দানি কারভাহালের গোলমুখে বাড়ানো ক্রস অবশ্য নাগালে পাননি রিয়াল আক্রমণভাগের কেউ।পরের মিনিটে বায়ার্নও এগিয়ে যেত পারত।তবে জিনাব্রির ক্রসেও টোকা দেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না।


ত্রয়োদশ মিনিটে মুহূর্তের ব্যবধানে দুবার সুযোগ হারায় হয় স্বাগতিক রিয়াল। প্রথমবার ভিনিসিউস জুনিয়রের শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও পোস্ট বাধা পেয়ে ফিরে আসে। ফিরতি বল ছয় গজ বক্সে পেয়ে শট নেন রদ্রিগো, এবার দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন নয়ার।


চাপে থাকা বায়ার্ন ম্যাচের প্রথম উল্লেখযোগ্য শট নেয় ২৮ তম মিনিটে। বক্সের বাইরে থেকে জোরাল নিচু ভলি করেন হ্যারি কেইন, ঝাঁপিয়ে এক হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন আন্দ্রি লুনিন।৪০ মিনিটে নয়ারের সেভটাও ছিল ঠিক তেমনই দুর্দান্ত। বক্সের বাঁ দিক থেকে ভিনিসিউসের বাঁকানো বুলেট গতির শট সবাইকে ফাঁকি দিয়ে ছুটছিল জালের দিকে।দারুণ দক্ষতায় সেটি ঠেকিয়ে দেন নয়ার।


রিয়ালের বেশ কয়েকটি সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ। বিরতির পর যেন হঠাৎ করে প্রাণ ফিরে বায়ার্নের খেলায়।আর তাতে মূল কৃতিত্ব বদলি নামা আলফানসো ডেভিসের।


একের পর এক সুযোগ সৃষ্টি করার পর ৬৮ মিনিটে এই কানাডিয়ান বায়ার্নকে লিড এনে দেন।হ্যারি কেইনের নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা করে বাড়ানো বল ডেভিস চমৎকারভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রিয়াল বক্সে ঢুকে দূরের কোণা দিয়ে জালে জড়ান। ঝাঁপিয়ে পড়লেও সেটি আটকাতে পারেন নি লুনিন।


গোল হজমের পরে নড়েচড়ে বসে রিয়াল। জোড়া পরিবর্তন আনেন কোচ আনচেলেত্তি।টনি ক্রুসের বদলি লুকা মদ্রিচ এবং অহেলিয়া চুয়ামেনির জায়গায় এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে নামান।


এর মিনিট দুয়েক পরে গোলের দেখা পেয়ে গিয়েছিল রিয়াল। তবে কর্নার থেকে হেডে করা সেই গোল বাতিল হয়ে যায়।বলজালে যাওয়ার আগ মুহূর্তে জসুয়া কিমিখকে মুখে ধরে নাচো ফের্নান্দেস ফেলে দেওয়ায় স্বাগতিকদের উল্লাস থেমে যায়, ভিএআরের সাহায্যে গোল দেননি রেফারি।


এরপর ৮১ তম হোসেলুকে নামান ফেদে ভালভের্দের বদলি হিসেবে।এই স্প্যানিশ মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়।


তার সৌজন্যে প্রথম গোলটি রিয়াল পায় ৮৮ তম মিনিটে।ভিনিসিয়ুসের দুর্বল শট সোজাসুজি হাতেই পেয়েছিলেন বায়ার্ন গোলরক্ষক নয়ার।ম্যাচে ততক্ষণ পর্যন্ত দুর্দান্ত নয়ার সহজ সেই বল অবিশ্বাস্যভাবে হাত ফসকে পেলেল।খুব কাছে পৌঁছে যাওয়া হোসেলু বল জালে জড়াতে একদমই ভুল করেননি।


যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই দলকে জয় এনে দেওয়া গোলটি করেন হোসেলু। নাচোর কাছ থেকে পাওয়া বল আন্টনি রুডিগার বাড়ান হোসেলুর দিকে, যিনি বল জালে জড়িয়ে উল্লাস শুরু করতে না করতেই অফসাইডের পতাকা তোলেন রেফারি।


তবে ভিএআর চেকে দেখা যায় রুডিগার-হোসেলু দুজনই অনসাইডে ছিলেন। বায়ার্ন মিউনিখকে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় রিয়াল।


এরপরও ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল বাভারিয়ানদের। যোগ করা সময় ৯ মিনিট দিলেও নানা বিঘ্নতায় শেষ পর্যন্ত খেলা চলে ১৫ মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু খেই হারানো বায়ার্ন আর পারেনি সমতায় ফিরতে।


সূত্রঃ ইনকিলাব অনলাইন