লিটন-ডু প্লেসির ঝড়ে চট্টগ্রামকে উড়িয়ে দিলো কুমিল্লা

বিপিএল ২০২২ নিউজ January 31, 2022 1,441
লিটন-ডু প্লেসির ঝড়ে চট্টগ্রামকে উড়িয়ে দিলো কুমিল্লা

২৪ ঘণ্টা আগে দলটিতে ছিল উৎকণ্ঠা। নানা নাটকীয়তার পর মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে হওয়া বিবাদের অবসান ঘটে রাতে। গতকাল রোববারের ঘটনার চাপ স্পষ্ট চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায়। আজ সোমবার (৩২ জানুয়ারি) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে খেলতে নেমে লড়াইও করতে পারেনি দলটি। ইমরুল কায়েসের দলের বিপক্ষে হারতে হয়েছে ৫২ রানের ব্যবধানে। চট্টগ্রাম পর্বে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে স্বাগতিকরা।


জহুর আহমেদে চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় দল দুটি। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ৩ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা ১৮৩ রান করে। জয়ের জন্য চট্টগ্রামকে পাড়ি দিতে হতো কঠিন পথ। কিন্ত জয়ের বন্দরে যাওয়ার আগেই পথ হারিয়ে দিশেহারা দলটি। ১৮৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭.৩ ওভারে মাত্র ১৩১ রান করে অলআউট হয় নাঈম ইসলামের দল।


ফিল্ডিং থেকেও ব্যাটিংয়ের সময় চাপটা ফুটে ওঠে। মাঠের বাইরের সব ঘটনার প্রভাব কেটে যেতে পারতো এক জয়ে। কিন্তু উলটো হেরে বসেছে তারা। লক্ষ্য বড় রান। কেনার লুইস বরাবরের মতো প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পরের বলেই আউট। একা লড়ে গেছেন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস। সঙ্গী হিসেবে তিনি কাউকে পাননি। ওপেনিংয়ে নেমে দলের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন ১৬তম ওভারে।


৭ চার ৩ ছয়ে এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ৬৯ রান। এ ছাড়া কেউ পেরোতে পারেননি বিশের ঘর। দশের নিচে আউট হয়েছে ৮ জন ব্যাটসম্যান। ব্যাট হাতে মিরাজ এসেই ঝড়ের আভাস দেন। কিন্তু স্ট্যাম্পিং হয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ১ ছয় ১ চারে আউট হয়েছেন ৯ বলে ১০ রান করে। শেষ পর্যন্ত ১৩১ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।


কুমিল্লার হয়ে বরাবরের মতো দারুণ বোলিং করেন নাহিদুল ইসলাম। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান, তানভীর ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম।


এর আগে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে এসে প্রথম খেলতে নেমেই কুমিল্লা ব্যাট হাতে দারুণ করেছে। ডু প্লেসিস-ডেলপোর্টের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্বাগতিক দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় ইমরুলের দল। তবে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ফেরেন মাত্র ১ রান করেন। আরেক ওপেনার লিটন দাস বিপিএলে খেলতে নেমেই দারুণ করেন। মাত্র ৩ রানের জন্য পাননি হাফসেঞ্চুরি। ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৪ বলে ৪৭ রান করেন। জয় ফিরলে প্লেসিসের সঙ্গে জুটি গড়ে এই রান করেন লিটন। তিনি আউট হলেও প্লেসিস ছিলেন শেষ পর্যন্ত।


দুজনের জুটি থেকে আসে ৫৫ বলে ৮০ রান। লিটন ফিরলে আসেন ইমরুল। কুমিল্লার অধিনায়ক ফেরেন মাত্র ১ রান করেই। এবার ডেলপোর্ট সঙ্গী হন প্লেসিসের। দুজনে সাগরিকার পাড়ে ঝড় তুলে কুমিল্লাকে এনে দেন লড়াকু সংগ্রহ। দুজনেই পান ফিফটির দেখা। প্লেসিস আশির ঘর পার করলেও ওভার শেষ হয়ে যাওয়াতে তিন অঙ্কের দিকে যেতে পারেননি।


৪০ বলে ৪ চার ও ৩ ছয়ে ফিফটি করা প্লেসিস অপরাজিত ছিলেন ৮৩ রান করে। তার ৫৫ বলের ইনিংসে চারের মার ছিল ৮টি আর ছয়ের মার ৩টি। দারুণ ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরষ্কার পান দক্ষিণ অন্যদিকে বিস্ফোরক ব্যাটিং করেন ডেলপোর্ট। ৪ চার ও ৩ ছয়ে মাত্র ২২ বলে তুলে নেন ফিফটি। অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে। চট্টগ্রামের হয়ে ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন নাসুম আহমেদ।


৩ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান কুমিল্লার। এ ছাড়া ৬ ম্যাচ খেলে সমান ৩টি করে জয় ও হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম।