ইসলামের নবী সা. মক্কার অমুসলিমদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে যখন মদিনায় যাচ্ছিলেন তখন মক্কার জন্য তাঁর মন কাঁদছিল দেশের জন্য, আনচান করছিল তাঁর মন ও মনন মাতৃভূমির বিয়োগে। যে মক্কার আলো-আঁধারিতে তাঁর বেড়ে ওঠা, যে পবিত্র ভূমির ধুলাবালুতে তাঁর শৈশব আর ছেলেবেলা, সেই পবিত্র মক্কা ছেড়ে যেতে ইচ্ছা হয়নি নবীজির। তাঁর চোখ বেয়ে নেমে আসছিল তখন অশ্রুবন্যা।
অশ্রুভরা চোখে নবীজি বলছিলেন, ওগো মক্কা, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার বুকেই আমার বেড়ে ওঠা, তোমার কোলেই আমার পূর্বসূরিরা শুয়ে আছে। তোমার বুকেই আল্লাহর ঘর।
মক্কার মুশরিকরা নির্যাতন করে আমাকে বের করে না দিলে আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না [ইবনে কাসির ৩,৪০৪]।
ইসলামে দেশপ্রেম আছে। আছে বিজয় উৎসবও। বিজয় ঘিরে আছে মহানবীর মানবতা ও উদারতার শিক্ষা। মুসলিম উম্মাহ বিজয়ের চেতনা গ্রহণ করেছে মহানবি সা.-এর মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে।
মক্কার প্রতি নবীজির আবেগ ও ভালোবাসার আরো জ্বলন্ত উদহারণ রয়েছে হাদিসে। নবীজি সা. মদিনা শরিফকে খুব ভালোবাসতেন। কোনো সফর থেকে ফেরার পথে মদিনার সীমান্তে উহুদ পাহাড় চোখে পড়লে নবীজির চেহারায় আনন্দের আভা ফুটে উঠত এবং তিনি বলতেন, এই উহুদ পাহাড় আমাদের ভালোবাসে, আমরাও উহুদ পাহাড়কে ভালোবাসি।
[বুখারি ২/৫৩৯,৩/১০২৮, মুসলিম ২/৯৯৩]।
ভালোবাসার শহর ছেড়ে গিয়ে দীর্ঘ দুই বছর পর নবীজি মক্কা বিজয় করলেন। কাফেরদের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন। তবে এই বিজয়ে কোনো রক্ত বয়ে গেল না। কোনো মায়ের বুক খালি হলো না। বরং মক্কার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদার হৃদয় ও মহানুভবতার কথা।
১৯৭১ এ প্রায় ৯ মাস যুদ্ধ করে আমার স্বাধীনতা পেয়েছি। এ যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ বাঙালি জীবন দিয়েছেন স্বাধীনতা অর্জনে।
বাংলার মুক্তিকামী জনতার প্রতিরোধের মুখে অবশেষে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের জেনারেল নিয়াজির আত্মসমর্পণের দলিলে সই করার পর আমরা স্বাধীনতা পাই।
সেজন্য বিজয় দিবস বাংলাদেশীদের অহঙ্কার। বাংলাদেশীদের গর্ব। আসুন, বিজয়ের রাঙাপ্রভাতে আমরা ব্যক্তি, পারিবার ও রাষ্ট্রে দেশপ্রেম, উদারতা ও কৃতজ্ঞতার শিক্ষা গ্রহণ করি।