লাইলাতুল কদর আরবী শব্দ যার অর্থ হলো বরকতময়, সম্মানিত বা মহামান্বিতরাত রাত। ফারসি ভাষায় একে শবে কদর বলা হয়। এই রজনীতে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সারারাত নফল নামাজ, কোরাআন ও হাদীসের আলোকে জিকির, কবর জিয়ারত এবং নিজের কৃত গুনাহের জন্য মহান আল্লাহর নিকট ক্ষামা প্রার্থনা করে থাকেন।
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ
"নিশ্চয়ই আমি (কোরআন)কে অবতীর্ণ করেছি এই মর্যাদাপূর্ণ রাত্রিতে (লাইলাতুল কদরে)। আর মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। ঐ রাত্রিতে ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিবরীল) অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিময় সেই রাত্রি ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত।" (সূরা কদর)
"নিশ্চয় আমি এ (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রাতে (লাইলাতুল কদরে), নিশ্চয়
আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী।
আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।" (সূরা দুখান, আয়াতঃ ৩-৬)
নামাজের নিয়ত আরবীতে :
“নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা‘আ-লা- রাক‘আতাই ছালা-তি লাইলাতুল কদর-নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা‘বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার”।
বাংলায় নিয়ত:- “আমি ক্বেবলামূখী হয়ে আল্লাহ্ এর উদ্দেশ্যে শবে কদরের দু‘রাক‘আত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবার”।
শবে কদরের নামাজ :
শবে কদরের নামাজ দু‘রাকাত করে যত বেশী পড়া যায় তত বেশি ছওয়াব। নামাজের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সূরা ইখলাছ, সূরা ক্বদর, আয়াতুল কুরছী বা সূরা তাকাছুর ইত্যাদি মিলিয়ে পড়া অধিক ছওয়াবের কাজ। এই ভাবে কম্পক্ষে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করা উত্তম। এর বেশি যত রাকাত আদায় করা যায় ততই ভালো।
কেউ যদি উপরে উল্লেখিত সূরাগুলো না পারেন তাহলে সূরা ফাতিহা পড়ার পর যে সূরাগুলো আপনি পারেন তার মধ্য থেকে প্রতি রাকাতে একটি করে সূরা মিলিয়ে নিতে হবে। এই ভাবে কম্পক্ষে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করা উত্তম। এর বেশি যত রাকাত আদায় করা যায় ততই ভালো।
প্রতি ৪ রাকাত পর পর কিছু তাসবিহ-তাহলীল আদায় করে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া কামনা করা অতি উত্তম। এই ভাবে সারা রাত নামাজ আদায় করা যেতে পারে।
পবিত্র শবে কদরে এই ভাবে নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যেতে পারে। তাই আসুন এই পবিত্র মাসের বিজোড় রাতগুলোতে মহান আল্লাহর নিকট নিজেকে সপে দিয়ে হাজার বছর ইবাদতের সওয়াব অর্জন করি।
এই পবিত্র রাতে আমরা বেশী বেশী করে নফল নামাজ এবং কোরআন তিলাওয়াত করি।