মাত্র চারটি টেস্ট খেলেই গত বছরের আগস্টে এই ফরম্যাটকে বিদায় জানান লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা । ২০২১ সালে ঘরের মাঠ পাল্লেকেল্লেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচটিই ছিল সেই ম্যাচ।
এরপর হুট করেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ২২ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজে অবসর ভেঙে ফেরেন তিনি। তাও আবার আইপিএল ছেড়ে দিয়ে। তখন মনে করা হয়েছিল- বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দৌরাত্মে জয় পেতেই হাসারাঙ্গার এই সিদ্ধান্ত।
কিন্তু অবসর ভেঙে টেস্টে ফেরার ঘোষণা দেয়ার পরদিন আইসিসির এক ঘোষণার পর জানা গেল অন্য ঘটনা। অর্থাৎ তার এই অবসর ভেঙে টেস্টে ফেরার ইচ্ছাটা ছিল একটা নাটক মাত্র। কেনন বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ইনিংসের ৩৭তম ওভারে আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন হাসারাঙ্গা। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুশি হতে না পেরে ওভার শেষে ক্যাপ নিয়ে মাটিতে ছুড়ে মারেন। ম্যাচ শেষে ওই ঘটনায় ফিল্ড আম্পায়ার তার বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনেন।
তখনই ধূর্ত হাসারাঙ্গা ও লঙ্কান টিম ম্যানেজমেন্ট অনুধাবন করেন যে লঙ্কান এ স্পিনার ডি মেরিট পয়েন্ট ও শাস্তি পেতে যাচ্ছেন। যার অর্থ তিনি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত ওই আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে হাসারাঙ্গাকে ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানার পাশাপাশি নামের পাশে তিনটি ডি মেরিট পয়েন্ট দিয়েছে আইসিসি।
এতে করে গত ২৪ মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২ বছরের মধ্যে তার নামের পাশে আটটি ডি মেরিটি পয়েন্ট যুক্ত হয়। যার ফলে আইসিসির নিয়মানুযায়ী, কোন ক্রিকেটার ২ বছরের মধ্যে যদি আটটি ডি মেরিট পয়েন্ট পান তাহলে ৭.৬ ধারায় সেটি ৪টি নিষেধাজ্ঞা পয়েন্ট হিসেবে গণ্য হবে।
যার অর্থ ওই ক্রিকেটারকে দুটি টেস্ট বা চারটি ওয়ানডে বা সম সংখ্যক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নিষিদ্ধ হতে হবে। নিয়মানুসারে, যে ফরম্যাট আগে আসবে ওই ফরম্যাটেই সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যেহেতু লঙ্কানদের আর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ নেই তাই এই নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর হতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এতে করে হাসারাঙ্গা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ৪টি ম্যাচ খেলতে পারতেন না।
কিন্তু শ্রীলঙ্কান ম্যানেজমেন্ট সেই নিষেধাজ্ঞা এড়াতে খেলেছেন মার-প্যাচের হিসেব। বিশ্বকাপের নিষেধাজ্ঞা এড়াতেই টেস্টের অবসর ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ হাসারাঙ্গা শুধু নামে টেস্ট থেকে অবসর ভেঙেছেন। আসলে তিনি কোন টেস্ট খেলবেন না। কথায় আছে- আইনের কিছু ফাঁকফোকড় থাকে। প্রচলিত প্রবাদের প্রয়োগ দেখালেন হাসারাঙ্গা ও লঙ্কান টিম ম্যানেজমেন্ট।
আসল নিষেধাজ্ঞা এড়াতে নকল নিষেধাজ্ঞার ফাঁদে নিজ ইচ্ছেয় পা দিলেন লঙ্কান লেগি।