বিপিএলের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৭৭ রানে সাত উইকেট হারিয়ে যখন একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রংপুর রাইডার্স, তখন এক প্রান্তে ঝড় তুলে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি এনে দেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। সেই পুঁজি নিয়ে বোলিংয়েও শুরুটা ভালো করে তারা। এরপর দারুণ প্রতিরোধ গড়েন মুশফিকুর রহিম। ভালো সঙ্গ পান কাইল মেয়ার্স ও ডেভিড মিলারের। তাতে রংপুরকে দর্শক বানিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে ফরচুন বরিশাল।
সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আলোচনায় ছিলেন দুজন। তবে মোটাদাগে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। মুশফিকুর রহিম, সাইফউদ্দিনরাই গড়ে দিয়েছেন পার্থক্য। দেশি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে ভর করে প্রেস্টিজিয়াস এই লড়াইয়ে রংপুরকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে গেল বরিশাল।
আগামী ১ মার্চ ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ২০২১ সালের বিপিএলেও ফাইনালে ছিল এই দুই দল। সেবার জয় পেয়েছিল কুমিল্লা। এক বছর বিরতি দিয়ে আবার ফাইনালে দেখা হচ্ছে এই দুই দলের।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বরিশালকে ১৫০ রানের সহজ লক্ষ্য দেয় রংপুর। ৯ বল এবং ছয় উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল। সেই সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালের টিকিট পেল বরিশাল।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে দেখে শুনে খেলতে থাকেন বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি দুজনের কেউই। ৮ বলে ১০ রান করে তামিম আউট হলে, ১৪ বলে ৮ রান করে তাকে সঙ্গ দেন মিরাজ।
সৌম্যকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ফাইনালের পথে এগিয়ে নিতে থাকে মুশফিক। ১৮ বলে ২২ রান করে আউট হন সৌম্য। এরপর ব্যাটিংয়ে এসে দ্রুত রান তুলতে থাকেন কাইল মায়ার্স। ১৫ বলে ২৮ রান করে এই ক্যারিবিয়ান তারকা আউট হলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন মুশফিক।
মুশফিকের ৩৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করে ৯ বল এবং ছয় উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল।
রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট শিকার করেন আবু হায়দার রনি। এ ছাড়াও ফজল হক ফারুকি এবং মোহাম্মদ নবি একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা দলটি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ৫ বলে ২ রান করে আউট হন শেখ মাহেদী। একই ওভারে শেষ বলে সাকিবকে আউট করে উল্লাসে ভাসে বরিশাল।
৪ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই তারকা ক্রিকেটার। এরপর রনি তালুকদার (৮) এবং নিকোলাস পুরান আউট হয় তিন রান করে। ২২ বলে ২৮ রান করে নিশাম আউট হলে মাত্র ৪৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে রংপুর।
তবে মোহাম্মদ নবিকে সঙ্গে নিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেনি কেউই। ১৫ বলে ১২ রান করে নবি আউট হলে, ১৪ বলে ১৭ রান করে তাকে সঙ্গ দেন সোহান।
শেষ দিকে রংপুর শিবিরে হাল ধরেন শামীম পাটোয়ারী। ১৯তম ওভারে ২৬ রান তুলে ২০ বলে ফিফটি তুলে নেন শামীম। শেষ পর্যন্ত শামীমের ৪৯ বলে ৫৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে ১৪৯ রানের লড়াকু পুঁজি পায় রংপুর।