রংপুরের রান পাহাড়ে চাপা পড়ল চট্টগ্রাম

ক্রিকেট দুনিয়া February 10, 2024 3,107
রংপুরের রান পাহাড়ে চাপা পড়ল চট্টগ্রাম

বাবর-ওমরজাইদের অভাব একটুও টের পেতে দিলোনা নিশাম-হেনড্রিকসরা । সকালে ঢাকায় এসে দুপুরে প্রথমবার বিপিএল খেলতে নেমেই ফিফটি করলেন রেজা হেনড্রিকস, আরেক তারকা জিমি নিশাম করলেন ঝড়ো ফিফটি। তাদের পাশাপাশি রনি তালুকদার, সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহানদের অবদানে দুইশো ছাড়ানো পুঁজি গড়ে রংপুর রাইডার্স। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া কখনই জেতার অবস্থা তৈরি করতে পারেনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।


শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামে রংপুর। দুই বিদেশি রেজা হেনড্রিকস ও জিমি নিশামের জোড়া ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২১১ রান সংগ্রহ করে রংপুর। হেনড্রিকস ৪১ বলে ৫৮ ও নিশাম ২৬ বলে ৫১ রান করেন।


প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও রেজা হেনড্রিকস।

পাওয়ার প্লেতে ৫২ রান যোগ করেন এই জুটি। এরপর দলীয় ৬১ রানে রনি ফিরলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। ১ ছক্কা ও ৩ চারে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার।


তবে রনি ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে স্বমহিমায় খেলতে থাকেন রেজা। ফলে বিপিএল মাতাতে এসেই দেখা পান নিজের হাফ-সেঞ্চুরির। ইনিংসের ১৩তম ওভারে শহিদুল ইসলামকে চার হাঁকিয়ে ৩৬ বলে ফিফটি পূরণ করেন প্রোটিয়া এই ব্যাটার।


এই জুটির ৫০ রানের পরই প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব। সালাউদ্দিন শাকিলের বলে ফেরার আগে ১ ছক্কা ও ৩ চারে ১৬ বলে ২৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস সাজান টাইগার দলপতি।


সাকিবের ফেরার ওভারে রেজাও সাজঘরে ফেরেন। মারমুখি ব্যাটিংয়ে বোলারদের তুলোধুনো করে ৪১ বলে ৫৮ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেন রেজা।


জোড়া উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে রংপুর। ফলে রানের গতিও খানিকটা কমে যায়। তবে শেষের ঝড়ে সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেন জেমি নিশাম এবং নুরুল হাসান সোহান জুটি।


তাদের মারমুখি ব্যাটিংয়ে ক্রমশই বাড়তে থাকে রংপুরের রানের গতি। বন্দরনগরীর দলটির বোলারদের পিছিয়ে ধুলোবুনো করে রংপুরকে চলতি বিপিএলের প্রথম ২০০ পেরোনো সংগ্রহ এনে দেন তারা।


দলীয় ২০০ পেরিয়ে ইনিংসের শেষ বলে দারুণ এক ছক্কায় নিজের অর্ধশতকও তুলে নেন কিউই জেমি নিশাম। শেষ পর্যন্ত এই জুটিতে ভর করে ৩ উইকেটে ২১১ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় রংপুর।


চট্টগ্রামের হয়ে সালাউদ্দিন শাকিল দুটি এবং নিহাদুজামান একটি করে উইকেট শিকার করেন।


বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় চট্টগ্রাম। ইনিংসে দ্বিতীয় ওভারে সাকিবের বলে বোল্ড আউট হন জশ ব্রাউন। ৯ বলে ১০ রান করেন এই ডান হাতি ব্যাটার। তৃতীয় উইকেটে সৈকতকে সঙ্গ নিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন টস ব্রুস । তবে ইনিংস বড় করতে পারেনি ব্রুসও।


১৩ বলে ১৪ রান করে ইমরান তাহেরের প্রথম বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সৈকত। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি শাহাদত হাসান দিপুও। ১৩ বলে ৯ রান করে সাকিবের বলে ক্যাচ তুলে দেন দিপু। যা সুন্দরভাবে তালুবদ্ধ করেন জেমি নিশাম। এতে দলীয় ৫০ রানেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হরিয়ে বসে চট্টগ্রাম।


কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন সৈকত। ৪২ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেন এই বাংলাদেশি ব্যাটার। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন আইরিশ ব্যাটার কার্টিস ক্যাম্ফার। দুজনের ব্যাটে ভর করে লক্ষ্য ছোট করতে থাকে বন্দর নগরীর দলটি।


শেষ চার ওভারে চট্টগ্রামের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৪ রান। ১৭তম ওভারে জেমি নিশামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন ক্যাম্ফার। ২১ বলে ২৪ রান করেন এই আইরিশ ব্যাটার।


এরপর ব্যাটিংয়ে এসে ব্যাট চালাতে থাকেন অধিনায়ক শুভাগত হোম। শেষ দুই ওভারে চট্টগ্রামে দরকার ছিল ৭০ রান। তবে ১৯তম ওভারে প্রথম বলেই রান আউট হন সৈকত। ৪৫ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন এই ডান হাতি ব্যাটার।


শেষ ৬ বলে তাদের দরকার ছিল ৬৭ রান। যা ছিল অসম্ভব। শেষ পর্যন্ত শুভাগত হোমের ১২ বলে ৩০ রান এবং নাহিদুজ্জমানের ২ রানের ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান তুলতে পারে চট্টগ্রাম। এতে ৫৩ রানের জয় পায় রংপুর রাইডার্স।


রংপুর রাইডার্সের হয়ে সাকিব আল হাসান ও জেমি নিশাম দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও ইমরান তাহের শিকার করেন এক উইকেট।