লো স্কোরিং ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার রোমাঞ্চকর জয়

ক্রিকেট দুনিয়া January 9, 2024 1,186
লো স্কোরিং ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার রোমাঞ্চকর জয়

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে ভেসে যায়। চারিথ আসালানকার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি কোন কাজেই আসেনি সেদিন । একই ভেন্যু প্রেমাদাসায় দ্বিতীয় ম্যাচে বৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি । জমজমাট লড়াইয়ের ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ২ উইকেটে হারায় শ্রীলঙ্কা ।


কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ওপেনার তিনাশে কামুনহুকাম্বের উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। দলের ১ রানের মাথায় গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে যান তিনাশে। এরপর জুটি বাঁধেন জয়লর্ড গাম্বি এবং অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। দলের ৬১ রানের মাথায় ৩৭ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে গাম্বিও সাজঘরে ফিরে যান ।


এরপর মিল্টন শুম্বাকে নিয়ে আগাতে থাকেন আরভিন। দারুণ সাবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন আরভিন। শুম্বাও সঙ্গ দিচ্ছিলেন ভালোভাবেই। তবে ৪৫ বলে ২৬ রান করে দলের ১১৪ রানের মাথায় আউট হন শুম্বা। এরপর ক্রিজে আসেন তারকা অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। তবে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। পরের ওভারেই আউট হয়েছেন ৫ বলে ১ রান করে।


এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণভাবে খেলে যাচ্ছিলেন আরভিন। ছয়ে নামা রায়ান বার্লও ধীরে ধীরে ক্রিজে জমে যান। বড় হতে থাকে দুজনের জুটি। তবে আশা জাগিয়েও তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারটা ছুঁতে পারেননি আরভিন। দলের ১৮২ রানের মাথায় ১০২ বলে ৮২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।


আরভিন ফেরার একটু পরেই আউট হয়েছেন বার্ল। দলের ১৯০ রানের মাথায় ৩৭ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান বার্ল। এরপর আর বেশিক্ষণ টেকেনি জিম্বাবুয়ের ইনিংস। দ্রুত বাকি উইকেট হারিয়ে ৪৪.৪ ওভারের মধ্যে ২০৮ রানের মাথায় অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ২১ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলেন ক্লিভ মাদান্দে।


শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩১ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেন মাহিশ থিকশানা। ২টি করে উইকেট নেন জেফরে ভ্যান্ডারসে এবং দুশমন্থ চামিরা। দিলশান মাদুশাঙ্কা তোলেন ১ উইকেট।


জবাব দিতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার আভিশকা ফার্নান্দো, খেলেছেন ৫ বলে ৪ রানের ইনিংস। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সাদিরা সামারাবিক্রমাও। ৩ বলে ৪ রান করে দলের ১৬ রানের মাথায় আউট হন তিনি। ওপেনার এবং অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ভালোভাবে শুরু করলেও লম্বা করতে পারেননি ইনিংস। ২৮ বলে ১৭ রান করে দলের ৫১ রানের মাথায় আউট হন কুশল। চারিথ আসালাঙ্কা ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যর্থ, ৭ বল খেলে ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন দলের ৫৪ রানের মাথায়।


চারে নামা তরুণ জানিথ লিয়ানাগে দারুণ সাবলীল ব্যাটিংয়ে দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন । মাঝে সাহান আরাচিগে ৩৯ বলে ২১ রানের ইনিংস। কঠিন পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন লিয়ানাগে।অসাধারণ ব্যাটিংয়ে জাগিয়েছিলেন সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও। কিন্তু একদম শেষ দিকে গিয়ে খেই হারিয়েছেন লিয়ানাগে, ছোঁয়া হয়নি তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারটা। দলের ১৭২ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে ১২৭ বলে ৯৫ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। 


ততক্ষণে অবশ্য জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু লিয়াঙ্গের আউটের ফলে পরিস্থিতি কিছুটা কঠিন হয়ে যায় লঙ্কানদের জন্য। শেষ দিকে জুটি বাঁধেন দুশমন্থ চামিরা এবং জেফরে ভ্যান্ডারসে।


চামিরা এবং ভ্যান্ডারসে মিলে নবম উইকেটে ৩৯ বলে যোগ করেন ৩৯ রান। ৬ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পায় শ্রীলঙ্কা। ১৮ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন ভ্যান্ডারসে। অন্যদিকে ২৫ বলে ১৮ রান করে টিকে ছিলেন চামিরা। 


জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩২ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন রিচার্ড নাগাভারা। এছাড়া ২ উইকেট নেন সিকান্দার রাজা। ১ উইকেট শিকার করেন ব্লেসিং মুজারাবানি।