নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হারানো, উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য তো বটেই, যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই কঠিনতম কাজগুলোর একটি। সেই কঠিন কাজটিই এবার করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
কন্ডিশন, ফর্ম, অভিজ্ঞতা-কোনো দিক দিয়েই এই সিরিজে এগিয়ে ছিল না বাংলাদেশ। বলতে গেলে অসাধ্য সাধন করে ফেলেছে টাইগাররা। মাউন্ট মঙ্গানুইতে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৮ উইকেটে জিতে গড়েছে ইতিহাস।
টাইগারদের এমন পারফরম্যান্সে ক্রিকেট বিশ্বজুড়েই চলছে আলোচনা। বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো মনে করছেন, সবকিছুর জন্য দলের ক্রিকেটারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।
আগামীকাল (৯ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। ক্রাইস্টচার্চে এই টেস্টের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য ও সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেছেন ডোমিঙ্গো।
টেস্ট জয়ের অনুভূতি নিয়ে টাইগার হেড কোচ বলেন, ‘দেখুন, ভালো কয়েকটা দিন কাটলো। ছেলেরা খুব উপভোগ করেছে, কারণ এর আগে নিউজিল্যান্ডে তারা জিততে পারেনি। আর নিউজিল্যান্ড তো বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। তাদের সঙ্গে লড়াই করা এবং জেতার জন্য অবশ্যই আপনাকে ভালো খেলতে হবে।’
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন ক্রিকেটাররা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এমন এক জয়। ডোমিঙ্গো মনে করছেন, কৃতিত্বটা দিতেই হবে ক্রিকেটারদের।
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘গত কয়েকটা মাস সব ফরমেটেই আমাদের জন্য খুব কঠিন কেটেছে। তাই এই ফল ছেলেদের জন্য দারুণ কিছু। এটা তাদের প্রাপ্য ছিল। কারণ তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং নিজেদের পরিকল্পনা মাঠে প্রয়োগ করেছে। তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে, তারা মাঠে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।’
ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে বরাবরই পেসাররা দাপট দেখান। আন্দাজ করাই যাচ্ছে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টাইগারদের বধ করতে সবুজ পিচই প্রস্তুত রাখবে কিউইরা। তবে সবুজ পিচকে ভয় করছেন না ডোমিঙ্গো।
বরং হুঙ্কারের সুরে বললেন বাংলাদেশ দলেও ভালোমানের পেসার আছে। তাই তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলামরাও পিচের সুবিধা নিতে পারে।
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমি এখনও পিচ দেখিনি। ডানেডিন, ওয়েলিংটন ও হ্যামিল্টনে গেলেও ক্রাইস্টচার্চে কোনো টেস্টের জন্য আমার আসাও হয়নি আগে। এই উইকেটে পেসাররা অনেক বেশি সুবিধা পায়। তবে এটা আমাদেরও সুবিধা দেবে।
নিজের দলের পেস আক্রমণ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন মানসম্পন্ন পেসার আছে। খুব কম সময়ই বাংলাদেশ ঘাসের উইকেটে সুবিধা নেওয়ার কথা ভাবতে পারে। তবে এখন আমাদের দলে উঁচুমানের তিনজন পেসার আছে। তারা আত্মবিশ্বাসী। শুরুতে বোলিং করতে পারলে আশা করি তাদের ঘায়েল করতে পারব।’
নিউজিল্যান্ডে এক ইতিহাস গড়া হয়ে গেছে। এবার আরও বড় ইতিহাসে চোখ ডোমিঙ্গোর। রাখঢাক না রেখেই বললেন, সিরিজ জয়ের সুযোগটা নিতে চান।
টাইগার হেড কোচ বলেন, ‘আগের সংবাদ সম্মেলনেই বলেছি, এটা অনেক তরুণ একটা দল। অভিজ্ঞ কয়েকজন আসেনি যারা আগে নিউজিল্যান্ডে খেলেছে। এই তরুণরা বাংলাদেশের ক্রিকেটে লম্বা ক্যারিয়ার গড়তে চায়। তারা অনেক উদ্যমী। নিউজিল্যান্ডে আগে বাংলাদেশের কোনো দলই সিরিজ জিততে পারেনি। তারা এখন এটার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।’