এবার বাকপ্রতিবন্ধী আকসারের পাশে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

ক্রিকেট দুনিয়া December 29, 2021 936
এবার বাকপ্রতিবন্ধী আকসারের পাশে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

জন্মগতভাবে বাক প্রতিবন্ধী। এখন শুধু মুখের কথাই নয়, শ্রবণশক্তিও হারিয়ে গেছে। মাত্র ২ বছর বয়সেই পিতৃহীন। এক বোন, দুই ভাইয়ের (দুজনই বাক প্রতিবন্ধী) মধ্যে সবার ছোট আকসার আহমেদ। মা দিলারা বেগমই ছোট ছেলের স্বপ্নজয়ের নেপথ্য শক্তি। সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের মোল্লারচকে জন্ম আকসারের।


কথা শোনেন না, বলতেও পারেন না। কিন্তু আকসার বোলিং করেন দুর্দান্ত। গতির সঙ্গে আছে বৈচিত্র্য। ঘণ্টায় ১৩৮ কিলোমিটার বেগে বোলিং করেন। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার এই বাঁহাতি পেসার ক্রিকেটের ভাষা সবই বুঝেন। বিভিন্ন একাডেমিতে অনুশীলনের পর ঢাকায় দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচেই ৫ উইকেট পেয়েছেন। কোচ-অধিনায়কের সঙ্গে ইশারায় হয় তথ্য বিনিময়। আকসারের গল্পটা প্রকাশ্যে এসেছে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনের পর।


সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে স্বপ্নের পানে ছুটছেন আকসার। এবার বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী দলের সদস্য ২৩ বছর বয়সী এ তরুণের আশা লাল-সবুজের জার্সিতে মাঠ মাতাবেন। স্বপ্ন পূরণে সারথী হিসেবে আকসার পাশে পাচ্ছে বিপিএলের দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। তরুণ এ ক্রিকেটারকে বিপিএলে দলের সঙ্গে রাখবে চ্যালেঞ্জার্স। এমনকি আগামী এক বছর আকসারকে পূর্ণ আর্থিক সহযোগিতা দেবে দলটি।


বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন চ্যালেঞ্জার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম রিফাতুজ্জামান। আকসারকে সব রকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।


আজ সংবাদ সম্মেলনে আকসারকে পাশে বসিয়ে কেএম রিফাতুজ্জামান বলেন, ‘আজকের যে সংবাদ সম্মেলন সেটি আকসারকে কেন্দ্র করে। প্রতিশ্রুতিশীল একজন বোলার সে। ধারাবাহিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ রকম অনেকেই কিন্তু সারা বাংলাদেশে উন্নতি করছে, নিজেদের তৈরি করছে। আরেকটু বেশি করতে পারবে যদি পেশাদার ক্রিকেটারদের আরেকটু কাছে আসার সুযোগ পায়।’


তিনি আরও বলেন, ‘এমন না যে শুধুই খেলার সুযোগ কিংবা অনুশীলনের সুযোগ, এছাড়াও যদি আমাদের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিরা আর্থিকভাবে খেলার জন্য সহায়তা করতে পারে। প্রতিনিয়ত একটা খেলোয়াড়ের ধরাবাঁধা কিছু খরচ থাকে। সেগুলোর সাথে যদি পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়টা নিশ্চিত করা যায়, এ রকম যদি কিছু কিছু করে, সেই জায়গা নিয়ে অন্যরাও এগিয়ে আসে। এটিই প্রথম উদাহরণ। এটা করেছি একান্তই নিজেদের পর্যবেক্ষণ থেকে যে শুরুটা অন্তত হওয়া উচিত।’


চ্যালেঞ্জার্সের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ ইয়াসির আলম বলেন, ‘আমরা শুরু করছি আকসারকে নিয়েই। ওর যথাযথ পুষ্টির জন্য পরবর্তী এক বছর সহায়তা করব, যেন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। ওকে নিয়ে কাজ শুরুর কারণ হল, ওর প্রতিবন্ধকতা দিয়ে শুরু। কথা বলতে পারে না, কথা শুনতেও পারে না। কিন্তু যদি ওর প্র্যাকটিস দেখেন, বোলিং দেখেন, ডিভিশন ক্রিকেটে অনেকগুলো ম্যাচও খেলেছে।’


ড্রাফটে নাম থাকলে আকসারকে দলভুক্ত করা হতো উল্লেখ করে প্রধান নির্বাহী আজ আরও বলেন, ‘আকসারের প্রতিভা দেখে আমরা অবাক। বিপিএলের ড্রাফটে থাকলে আমরা তাকে নিয়ে নিতাম। তবে ক্যাম্পে থাকবে কোচের সঙ্গে থাকবে, যতটুকু স্কিল নেয়া যায়।’