ডায়লগ বেইসড মুসাফির..
সিনেমায় এত এত ডায়লগ আছে যে কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব তল পাওয়াটা মুশকিল।ক্যাটাগরি করে সিলেক্টিভ ডায়লগ বলা যায়ঃ
* অ্যাকশন – অ্যাকশন ডায়লগই এ সিনেমায় চালকের ভূমিকায় ছিল।নায়ক, ভিলেন মিলিয়ে ছিল।যেমন-
– শুভকে গুলি করে মারজানকে নিয়ে যাওয়ার পরে অজ্ঞান থেকে ওঠা শুভর ডায়লগ ‘মনের গহীনে ভালোবাসা নামক শব্দটা কখন যে বাসা বেঁধেছে বুঝতেই পারিনি।সেই অনুভূতিটাকে বাঁচাতে আজ আমি যে কোনো কিছুকে বরণ করতে পারি এমনকি মৃত্যুকেও।’
– মিশাকে বলা শুভর সংলাপ ‘গল্পের শেষ যে করে সেই হয়,নায়ক।’
– ‘মুসাফিরের জীবনে শেষ বলে কিছু নেই’- মারজানকে বলা শুভর ডায়লগ।
– ‘আমার পথ থেকে তুমি সরে দাঁড়াও নইলে পথ তোমার পায়ের নিচ থেকে সরে যাবে’- কোবরাকে মিশার বেস্ট ডায়লগ।
– ‘আইন পোশাকে থাকে না, আইন থাকে মনে’- মারজানকে বলা মিশার ডায়লগ।
– তোরে অামি এতগুলা টুকরা করুম যাতে কেউ ভাগে না পায় – টাইগার রবির ডায়লগ।
– গ্যারান্টি আর তবরেজ একই শব্দ – টাইগার রবির ডায়লগ।
– ‘মানুষের তো একটা কলিজা থাকে, তোর তো সারা শরীরে কলিজা- টাইগার রবি।
* রোমান্টিক :
– ‘বাচ্চা আর বাবা এক টিম, মা আর এক টিম’- মারজানের সাথে খুনসুটিতে শুভর ডায়লগ।
* রিয়েলিস্টিক :
– ‘আমি আর কি করেছি বলো, তোমাকে মানুষ থেকে পশু বানিয়েছি’- শুভকে বলা প্রসূন আজাদের ডায়লগ।ফ্যান্টাসিতে শুভ দেখে এটা।
* কমেডি : হারুন রশীদের একচ্ছত্র অাধিপত্যে কমেডি ডায়লগগুলো সুপার।স্ট্যান্ডিং কমেডির ভরপুর স্বাদ দিয়েছে সেগুলো।
-‘ খুন আর কিলিং কি এক হইলো বস? খুন করলে হয় খুনী আর কিল করলে বলে কিলার।আপনি আমাদের ভরসা’ – শুভর সাথে প্রথম দেখায় বলা ডায়লগ
– বস, ঐ মাইয়ারে আপনি পাইবেন না।দ্যাখেন বাজার থাইকা ইলিশ কিনা সরিষা দিয়া রাইন্ধা খাইব- শপিং মলে শুভকে বলা।
-‘বাহির বলে দূরে থাকুক, ভিতর বলে আসুক না’ যেই বলুক বস মনের মধ্যে অনেক কষ্ট নিয়া বলছে বস’- মারজানকে বেঁধে শুভকে বলা জোস ডায়লগ।
– ‘ডাকে পাখি খোলো আঁখি’- রোমেলকে জাগানোর জন্য বলে।দর্শক খুব মজা পেয়েছে এটাতে।
– ‘কাহিনী তো ঘটনা হয়ে গেছে বস’-
সবচেয়ে মজার ডায়লগ।
– ‘আপনি আমারে ছাড়া খাবার কিনবেন বস, খাবারের মধ্যে তো কোনো প্রোটিনই থাকব না’- আর একটা মজার ডায়লগ।
এভাবে পরিস্থিতি বিচারে স্ট্যান্ডিংয কমেডিতে মাতিয়েছে হারুন রশীদ।জানান দিয়েছে ঢালিউডে তার লম্বা জার্নি শুরু হচ্ছে।
আইডিয়া + টেকনিক…
এ দুটো চলে হাত ধরাধরি করে চলে।আশিকুর রহমান আগের সিনেমা থেকে নিজেকে আপডেট করতে অ্যাকশন, কমেডি যোগ করে দৃটোকে ব্যালেন্স করে দর্শকের চাহিদাকে বোঝার চেষ্টা করেছেন।তিনি সফল সে জায়গায়।যে আইডিয়া সাধারণত বাইরের দেশের সিনেমায় দেখা যায় তাকে স্টাডি করে একজন পেশাদার খুনীর জীবন তুলে ধরেছেন সিক্রেট এজেন্সির আলাদা গল্পের সাথে ইন করে।এ আইডিয়ার সাথে অ্যাকশনে মার্শাল আর স্ট্যান্ডিং কমেডির সাথে মাল্টিপারপাস ভিলেন এনে একসাথে টেকনিক সাজিয়েছেন।এ বড় কাজটা প্রথম দেখা গেল।আশিকুর রহমান এখানে অনেকের থেকে অনেক এগিয়ে থাকলেন।
ক্যামেরাওয়ালা…
অবাক করা ব্যাপার ক্যামেরায় ঢাকা শহর এত গর্জিয়াস লাগল দেখে। ড্রোন ক্যামেরার শটগুলোতে আকাশ থেকে দেখানো ঢাকা শহর অালাদা লেগেছে।কাঁপা কাঁপা ইমেজের শটগুলো মাঝে মাঝে খানিকটা চোখে ধরলেও এ সিস্টেমটা তামিল বা অাজকালকার সালমান খানের ‘ওয়ান্টেড’ এর মতো কিছু স্বাদ দেয়।
তবে বলতেই হয়, ক্যামেরার কাজ দেখার জন্যও এখন সিনেমা দেখা দরকার এ প্রজন্মের।
গান গেয়ে পরিচয়..
সব কটা গানই ভিন্ন।চাহিদা অনুযায়ী বানানো।টাইটেল ট্র্যাক যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ, আলতো ছোঁয়াতে* তার থেকে ভিন্ন।পথ জানা নেই* অ্যাডভেঞ্চারাস গান।স্যাড ভার্সনের ‘ফিরে আয়’ তাহসিনের ডিফারেন্ট ভয়েসের জন্য আলাদা স্বাদ দিয়েছে দর্শককে।এর প্রমাণ নিতে ইউটিউব কমেন্ট দেখা যেতে পারে।
এভাবে না হয়ে যদি ওভাবে হত..
ভুল ধরাধরির মতো ব্যস্ততা থেকে নয় জাস্ট আরো ভালো করার অপশন ছিল এমন চিন্তা থেকে বলছি কিছু কথা –
* যদি প্রসূন আজাদ মূল নায়িকা হত তবে প্রধান ফিমেল ক্যারেক্টার নিয়ে কেউ টু শব্দটিও করতে পারত না
* যদি ফিনিশিং আর একটু টুইস্টে হত তবে শুভ+মিশা দুজনের ক্যারেক্টারাইজেশন আরো একটু mysterious হত।
* সিন্ডি রোলিংকে আর একটু বড় স্পেস দিলে তার কাজের জায়গাটা আরো উপভোগ্য হত।
* স্টান্ট টেকনিক আরো ভালো হতে পারত
মুসাফির-২…
কোবরা ও সোহেল রানার অসমাপ্ত গল্পই শেষে জানান দিচ্ছিল মুসাফির-২ এর।সেটাই ভাসল পর্দায়। এত অসাধারণ ফুল প্যাকেজ বাণিজ্যিক সিনেমার দ্বিতীয় কিস্তির জন্য প্রতীক্ষাটা দর্শকের ভালোই থাকবে।তবে সে কিস্তির জন্য নির্মাতার আরো যত্ন দরকার কাজেকর্মে।দ্বিতীয় কিস্তি অনেক সময় ভালো হয় না তাই বলা আর কি.."