সিলেট ও চট্টগ্রামের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে রাজশাহীতে কৌশলী জনসভা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিভিন্ন জায়গায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানের তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। জনতার ঢল নেমেছিল আশপাশের রাস্তায়ও।
জনসভায় আসা নেতাকর্মীদের অভিযোগ দূর-দূরান্ত থেকে সভায় যোগ দিতে তাদের বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। এমনকি ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েক কেন্দ্রীয় নেতাকে সড়কপথে আসতে বাধার মুখে পড়তে হয়।
জুমার নামাজের পর রাজশাহীর ঐতিহাাসিক মাদ্রাসা ময়দানে ঐক্যফ্রন্টের জনসভাস্থল ছিল অনেকটা ফাঁকা। দুপুর ২টা থেকে মঞ্চে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তাদের চোখে-মুখে ছিল হতাশার ছাপ; কিন্তু আড়াইটার পরপর মাদ্রাসা মাঠে
একযোগে জনতার ঢল নামে। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন । বিকাল ৩টার মধ্যে জনসভাস্থল কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এ সময় নেতাকর্মীদের হাতে নির্বাচনী পোস্টার-ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড শোভা পায়।
রাজশাহীর আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অনেকেই তাদের জনসভাস্থলে আসার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাদের একজন জাহিদুল ইসলাম। রাজশাহীর বিভাগীয় জনসভায় আসতে ভোর ৫টায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পাবনা থেকে বাসযোগে রওনা দিয়েছিলেন; কিন্তু কিছুদূর এলে বাসটি পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। পুনরায় নিজ এলাকায় ফিরে বিকল্প পথ ধরে মোটরসাইকেল যোগে আসতে হয়।
নওগাঁর পাহারপুর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ বলেন, রাজশাহী আসতে চার জায়গায় তাদের পুলিশ বাধা দিয়েছে। যেখানে রাজশাহী পৌঁছতে সময় লাগে দেড় থেকে পৌনে ২ ঘণ্টা, সেখানে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। শুধু কর্মীরাই নন; জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই এমন বাধার মুখে পড়েছেন। এমন কি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম কে বাধা দেয়া হয় ।
জনসভায় বক্তব্য দানকালে বঙ্গবীরকে বহনকারী গাড়িটিও বেশ কয়েকবার বাধার মুখে পড়ার কাহিনি বর্ণনা করেছেন তিনি। বঙ্গবীর বলেন, টাঙ্গাইল থেকে তিনি রাজশাহীর জনসভায় যোগ দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকবার তার গাড়ি ভুলপথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়; কিন্তু অচেনা পথ পাড়ি দিয়ে শেষ পর্যন্ত জনসভায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে জনসভাস্থলে আসার সময় অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জনসভায় অভিযোগ করেন নেতারা। তারা বলেছেন, শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে বলেছিলেন, সভা-সমাবেশ করতে কাউকে বাধা কিংবা হয়রানি করা হবে না; কিন্তু রাজশাহী বিভাগীয় জনসভায় আসতে অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা বলেন, শত বাধা পেরিয়ে নেতাকর্মীরা প্রমাণ করেছেন, জনপ্রিয় নেত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কোনো বাধাই কাজ করে না।