বাবা কারাগারে ছিলেন। আর সেই সুযোগে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গত সাত মাস ধরে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে আসছিলেন তারই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ আরো দুজন শিক্ষক। এছাড়া আরো ১৫ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছে ওই কিশোরী। শিক্ষক ছাড়া অন্য ১৫ জন কিশোরীর সহপাঠী। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহারের সারন জেলার পারসাগর গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে।
১৩ বছরের ওই কিশোরী এ ঘটনায় জড়িত মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক উদয় কুমার ওরফে মুকুন্দ সিংহসহ অন্য দুই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে দুই নাবালক ছাত্রকেও। বাকিদের আটকের জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ঘটনার শুরু। ছাত্রীর অভিযোগ, ওই মাসেই তিন ছাত্র মিলে স্কুলের শৌচাগারে তাকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ভিডিও করে রাখে। স্কুল বা বাড়ির কাউকে জানালে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
এখানেই থেমে থাকেনি ওই ছাত্রেরা। ভিডিওটি স্কুলের অন্য ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। ওই তিন ছাত্রের সঙ্গে আরো ১২ জন ছাত্র যোগ দেয়। ক্রমে সেই ভিডিও স্কুলের শিক্ষকদের হাতে গিয়ে পড়ে। শুধু সহপাঠী ছাত্ররাই নয়, ভিডিও হাতে পাওয়ার পর ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতে থাকেন দুই শিক্ষক।
বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে স্কুলের অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিল কিশোরী। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরে থাক, উল্টো তিনি নিজেই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটা এক সময় ১৮ তে গিয়ে দাঁড়ায়। সাত মাস ধরে লাগাতার ধর্ষণ করতে থাকে স্কুলের অধ্যক্ষ, দুই শিক্ষক-সহ ১৫ জন।
পুলিশ জানিয়েছে, বাবা জেলে থাকার কারণে ভয়ে, আতঙ্কে ঘটনাটা কাউকে জানানোর সাহস পায়নি ওই ছাত্রী। বাবা জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই তাকে গোটা ঘটনা জানায় সে। এর পরই মেয়েকে নিয়ে ওই ব্যক্তি পুলিশের দ্বারস্থ হন। পারসাগরে একমা থানায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে সংঘব্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে ওই ছাত্রী।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আটক করা হয় স্কুলের অধ্যক্ষ এবং দুই শিক্ষককে। আটক করা হয় দুই ছাত্রকে। মহিলা থানায় ছাত্রীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তদন্তের জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। -কালের কন্ঠ