ভারতের জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী সম্পর্কে আলাদা করে বলার বিশেষ কিছু নেই। অহিংসার পূজারী এই মানুষটি সারাজীবন নিজ দেশের হয়ে, দশের হয়ে সংগ্রাম করে গিয়েছেন।
ভারতের স্বাধীনতার এতবছর পরও তাঁর আদর্শ অন্যতম পাথেয় বলে বিবেচ্য হয়েছে সারা বিশ্বে।
তবে জীবদ্দশায় মহাত্মা যে মহান আদর্শ নিয়ে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তা সেই দেশটিতে সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে। তার আগে মহাত্মার জন্ম জয়ন্তীতে জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে অজানা কয়েকটি তথ্য।
১. মৃত্যুর পর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য পাঁচবার মনোনীত হন মহাত্মা গান্ধী। কিন্তু সে সময় নোবেল কমিটি বারবারই দুঃখ প্রকাশ করে, কারণ সে সময়ে মরণোত্তর নোবেল পুরস্কার দেওয়ার রীতি ছিল না।
২. ৪টি মহাদেশের ১২টি দেশের গণ-আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী।
৩. যে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করে দেশকে স্বাধীনতা এনে দেন গান্ধী, সেই ব্রিটেন মহাত্মার জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ১৯৬৯ সালে তাঁর নামে ডাকটিকিট চালু করে।
৪. জানা গিয়েছিল, মহাত্মা প্রতিদিন ১৮ কিলোমিটার পথ হাঁটতেন। সেই হিসাবে পৃথিবী পরিক্রমায় বের হলে তিনি দুইবার পৃথিবী চষে ফেলতে পারতেন।
৫. একসময় সেনাদলে নাম লিখিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। তবে যুদ্ধের বীভৎসতা দেখে তিনি এর ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে অহিংসার প্রতি আরো বেশি করে আকৃষ্ট হন।
৬. স্বাধীনতা পাওয়ার পরে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর প্রথম বক্তৃতার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না গান্ধী। ধর্মীয় সংহতি বজায় রাখতে কলকাতায় ছিলেন তিনি।
৭. গান্ধীর ব্যবহৃত বহু সামগ্রী, এমনকি যে বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় তিনি খুন হন, সেটিও মাদুরাইয়ের গান্ধী মিউজিয়ামে সংরক্ষিত করে রাখা রয়েছে।
৮. মহাত্মা গান্ধীর ইংরেজি উচ্চারণের মধ্যে আইরিশ প্রভাব ছিল। কারণ তাঁর প্রথম শিক্ষক ছিলেন একজন আইরিশ।
৯. লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন মহাত্মা। এরপর অ্যাটর্নি হন। তবে প্রথমবার আদালতে বক্তব্য রাখতে উঠে নার্ভাস হয়ে পড়েন গান্ধী। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে পড়েন ও মামলা হেরে যান।
১০. মহাত্মা গান্ধীর ভক্ত ছিলেন মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপলের স্রষ্টা স্টিভ জবস। তাঁর দেখাদেখি জবসও গোলাকার ফ্রেমের চশমা পরতেন। পরে সেটাই হয়ে উঠেছিল জবসের স্টাইল স্টেটমেন্ট।
১১. একজোড়া বাঁধানো দাঁত ছিল গান্ধীর। প্রয়োজনের সময় ছাড়া সেটিকে কাপড়ে মুড়ে কাছে রাখতেন তিনি।
১২. মহাত্মা গান্ধীর নামে ছোট রাস্তাগুলি বাদে মোট ৫৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে মহাত্মার নামে মোট ৪৮টি রাস্তা রয়েছে।
১৩. দক্ষিণ আফ্রিকাতে থাকাকালীন বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে ফুটবলের প্রসারে ব্রতী হন গান্ধী। তিনি ডারবান, প্রিটোরিয়া ও জোহানেসবার্গে ফুটবল ক্লাব খুলতে উদ্যোগী হন। তিনটিরই নাম ছিল, 'প্যাসিভ রেজিস্টার্স সকার ক্লাব'।
১৪. গান্ধীজী কখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাননি। তবে সেখানেও তাঁর ভক্ত কম নেই। তাঁর অন্যতম বড় অনুরাগী ছিলেন হেনরি ফোর্ড। এক সাংবাদিকের হাত দিয়ে তাঁকে একটি সুতা কাটার চরকা উপহার দেন গান্ধী।