ভারতে ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তারিখে উদ্বোধন করা হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ ‘সর্দার সরোবর ড্যাম’। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বাঁধের উদ্বোধন করেন তার ৬৭তম জন্মদিনে। এ বাঁধ বিষয়ে ১০ তথ্য জেনে নিন।
১. এ বাঁধের ৩০টি গেট রয়েছে, যার প্রতিটির ওজন সাড়ে চার শ টন। এগুলো বন্ধ করতে এক ঘণ্টা সময় লাগে। বিশ্বের কংক্রিট ব্যবহারের দিক দিয়ে এ বাঁধ দ্বিতীয়।
২. এ বাঁধটি আট লাখ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে সহায়তা প্রদান করবে। এ ছাড়া ১৩১টি শহরকেন্দ্রে ও সাড়ে নয় হাজারেরও বেশি গ্রামে খাবার পানি সরবরাহ করবে। ভারতের গুজরাট, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও মধ্য প্রদেশে এ বাঁধের প্রভাব পড়বে।
৩. উদ্বোধনের আগেই এ বাঁধের দ্বারা ১৬ হাজার কোটি রুপি আয় হয়েছে, যা এর নির্মাণ ব্যয়ের দ্বিগুণ।
৪. এ বাঁধের পরিকল্পনা করা হয় ভারতের স্বাধীনতারও আগে। এরপর ১৯৪৬ সালেই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রকল্পটি শুরু করেন। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৬১ সালের ৫ এপ্রিল।
৫. ১৯৮৫ সালে এ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠে। এ প্রকল্পের ফলে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এ সময় মানুষের নজরে আসে। পানির উচ্চতা বাড়ায় লাখ লাখ মানুষের বাড়িঘর থেকে সরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের মাধ্যমে এ বাঁধের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয় অসংখ্য মানুষ। অরুন্ধতী রায়, বাবা আমতে, আমির খান ও অন্যান্য বহু ব্যক্তি এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হন। বাঁধটি নির্মাণের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে সরকারের প্রয়োজনীয় পুনর্বাসনের আশ্বাসে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
৬. প্রথম পর্যায়ে বাঁধটির যে উচ্চতা পরিকল্পনা করা হয়েছিল তার চেয়েও ১৭ মিটার উঁচু করার অনুমোদন নেওয়া হয় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত থেকে।
৭. নর্মদা বাঁধ কর্তৃপক্ষের দাবি এ বাঁধটি নির্মিত হলে ক্ষতির তুলনায় লাভ বেশি হবে। পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ এলাকায় গাছপালা ১০০ গুণ বাড়বে। একটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাতটি পরিবার উপকৃত হবে।
৮. এ বাঁধ বিরোধী আন্দোলনকার মেধা পাটকর জানিয়েছেন, এখনো মধ্য প্রদেশের ৪০ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসন না করেই তাড়াহুড়ো করে বাঁধটি উদ্বোধন করা হয়েছে।
৯. মূল বাঁধটি ৩,৯৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫৩৫ ফুট উচ্চতার। এর প্রভাব পড়বে ৮৮ হাজার বর্গ কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত এলাকায়।
১০. এ বাঁধে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ প্রকল্পের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১,৪৫০ মেগাওয়াট। ভারতের চারটি রাজ্য এ বিদ্যুৎ ভাগ করে নেবে।
সূত্র : বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড