আমরা সবাই জানি যে দুধ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কারণ এতে ক্যালসিয়াম থাকে। দুধ আপনার ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। দুধ শুষ্ক ত্বককে হাইড্রেটেড হতে সাহায্য করে, ত্বককে এক্সফলিয়েট করে, ত্বকের যন্ত্রণা কমায় এবং ডার্ক স্কিনকে হালকা করে। চিকিৎসক এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞদের মতে দুধ ত্বকের জন্য অত্যন্ত চমৎকার একটি প্রাকৃতিক এজেন্ট। কেন তা জেনে নিই চলুন।
১। মুখ ধোয়ার জন্য
ত্বক পরিষ্কার করার অনন্য ক্ষমতা আছে দুধের। দুধ তেলে দ্রবণীয় অপরিষ্কার উপাদান দূর করতে পারে চর্বিতে দ্রবণীয় এনজাইম লাইপেজের মাধ্যমে, প্রোটিন ভিত্তিক অপরিষ্কার উপাদান দূর করতে পারে প্রোটিয়েজের সাহায্যে এবং মৃত চামড়া দূর হয় ল্যাকটিক এসিডের সাহায্যে। দুধ দিয়ে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে (ব্রণ নেই এমন ত্বকে) তুলার বলে দুধ লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন মুখের ত্বকে এবং শুকাতে দিন।
২। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে
দুধ একটি সম্পূর্ণ ময়েশ্চারাইজার যাতে পানি, ফ্যাট ও প্রোটিন থাকে। তাই ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা দূর করতে সাহায্য করে দুধ। দুধ থেকে উপজাত হিসেবে উৎপন্ন মাখন এবং ঘিও শুষ্ক ত্বকের জন্য ভালো।
৩। ত্বককে উজ্জ্বল করতে
দুধ ত্বকের রঞ্জককে ঢেকে ত্বককে হালকা করতে সাহায্য করে। ত্বকের তামাটে ভাব ও কালো দাগ দূর করতে দুধের তৈরি ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
৪। ত্বকের মেরামতে সাহায্য করে
ক্লিওপেট্রার দীপ্তিময় এবং বলিরেখা মুক্ত ত্বকের রহস্যটি হচ্ছে দুধের ব্যবহার। দুধের এনজাইম, প্রোটিন, মিনারেল এবং খনিজ উপাদান বলিরেখা কমতে সাহায্য করে। নিয়মিত দুধ দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।
৫। সংবেদনশীল ত্বককে শান্ত করতে সাহায্য করে
যাদের সংবেদনশীল ত্বক তারা প্রায়ই এমন ক্লিঞ্জার খুজেন যা তাদের লাল হয়ে যাওয়া ও যন্ত্রণাকর ত্বককে শীতল করতে পারে। তারা (ব্রণ নেই যাদের)দিনে দুইবার দুধ দিয়ে মুখের ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন।
৬। সানবার্ন দূর করতে
দুধের অ্যান্টিইনফ্লামেটরি, ময়েশচারাইজিং এবং ত্বক মেরামতকারী উপাদান সানবার্নকে দূর করতে পারে। ঠান্ডা দুধে তোয়ালে ভিজিয়ে নিয়ে আক্রান্ত ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। তবে হোল ফ্যাট মিল্ক বা মিল্ক ক্রিম ব্যবহার করবেন না। কারণ এর ফ্যাট তাপকে বের হয়ে যেতে বাঁধা দিতে পারে।
৭। ফাটা ত্বকের নিরাময়ে
দুধ গোড়ালির ফাটা মেরামতে কাজ করে মৃত চামড়া দূর করার মাধ্যমে। দুধ গোড়ালির শুষ্কতা কমায়। উষ্ণ পানিতে ৫ টেবিল চামচ নারিকেল, ৫ টেবিল চামচ ওটস এবং আধা কাপ দুধ মেশান। এই মিশ্রণটিতে ১০-১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। তারপর ঝামা পাথর দিয়ে সামান্য ঘষে নিন এবং সবশেষে নারকেল তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন।
৮। চুল গজাতে
চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে দুধ। চুল ধোয়ার পরে ঘোল লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট রেখে দিন এবং উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ত্বকে ব্যবহারের জন্য কাঁচা বা অপাস্তুরিত দুধ ভালো। ব্রণ প্রবণ ত্বক যাদের তাদের দই বা ঘোল ব্যবহার করাই ভালো। যদি দুধ ব্যবহারের ফলে ব্রণ হয় তাহলে ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া উচিৎ। অনেকবেশি সংবেদনশীল ত্বক যাদের তাদের ত্বকে দুধ সহ্য নাও হতে পারে। কারণ দুধের pH হালকা এসিডিক।