ব্রণ খুব সাধারণ একটি সমস্যা। ব্রণ ত্বকের তেলগ্রন্থি বা সেবাশিয়াস গ্রন্থির প্রদাহজনিত রোগ। সাধারণত বয়ঃসন্ধিক্ষণে কিংবা প্রাপ্তবয়স্কদেরও ব্রণ হতে দেখা যায়। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও হরমোনের তারতম্যের কারণে এর প্রকোপ বেশি হয়। ব্রণের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে- অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন থেরাপি, অ্যান্টি এন্ডোজেন, স্পাইরোনোল্যাকটন।
বংশগত কারণেও ব্রণ হয় এবং প্রসাধনসামগ্রী, মানসিক চাপ ও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও ব্রণ হতে পারে। কিশোরী-তরুণীদের ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট অনেক পানির দানা বা পলিসিস্ট থেকে ব্রণ বেশি হয়।
ব্রণ হলে নখ দিয়ে খোটা উচিত নয়। তাতে ব্রণ দাগ ও গর্ত হয়ে যায়। ত্বক চিকিৎসকের পরামর্শে ফেসওয়াশ ব্যবহার করে পরিষ্কার রাখতে হবে।
এছাড়া মাইক্রোডামব্রেশন নামক প্রসিডিউর করা যায়। ব্রণের নিরাময়যোগ্য চিকিৎসাও রয়েছে। আইসোট্রি বিলরেন নামক ট্যাবলেট ব্যবহার করলে সিস্টিক বা পুঁজযুক্ত ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করা সম্ভব। তবে গর্ভাবস্থায় এটি ব্যবহার করা যায় না এবং দাম কিছুটা বেশি। ব্রণের চিকিৎসা অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদে নিতে হয়। এ জন্য ধর্যসহকারে একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রণের সাধারণ কারণের মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন মুখমণ্ডল স্পর্শ করা, বারবার চিবুকের সঙ্গে টেলিফোন চেপে ধরা, ত্বকের ছিদ্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী তৈলাক্ত প্রসাধনী বা ক্রিম ব্যবহার করা অথবা একই সময়ে অনেক পণ্য মাখার ফলে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া। (গাঢ় সানস্ক্রিন, উচ্চ ময়েশ্চারাইজার এবং তেলতেলে ফাউন্ডেশন হঠাৎ করে ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দিতে পারে)। এছাড়া তেলজাতীয় ও ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
সকালে করণীয়: সকালে হালকা এবং সাবান বিহীন কোনো ক্লিনজার দিয়ে প্রথম মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত। এরপর ত্বক অনুযায়ী লোশন লাগিয়ে নিবেন।
রাতে যা করবেন: বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে পি অ্যাকনি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে কম উত্তেজক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বেনজয়েল পার অক্সাইড সল্যুশন ব্যবহার করা। এমন লোশন খুঁজুন যাতে ২.৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত উপাদান রয়েছে। এটা নির্ভর করে আপনার ত্বকের সংবেদনশীলতার ওপর।
সপ্তাহের কাজ: প্রতি সপ্তাহে একবার আপনার মুখ বাষ্প দিয়ে পরিষ্কার করুন, এটাকে বলে স্টিম ক্লিনজিং। এক্ষেত্রে আপনি এক গামলা গরম পানির বাষ্প নিতে পারেন। এরপর সালফার, বেনজয়েল পার অক্সাইড অথবা স্যালিসাইলিক এসিডসমৃদ্ধ মাস্ক ব্যবহার করুন, এতে আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলো মুক্ত হবে এবং ত্বক মসৃণ হবে। বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ ব্রণ হলে সপ্তাহে ঘনঘন অথবা দু’বার মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন। যাদের ত্বক কোমল, পাতলা ও ফর্সা এবং যাদের অ্যাকনি রোজাসিয়া হয়েছে তাদের বাষ্পের সাহায্যে ত্বক পরিষ্কার করা ত্যাগ করতে হবে। কারণ দীর্ঘদিন বাষ্প ব্যবহারে রজনালিগুলো প্রসারিত হয়ে যেতে পারে।
ত্বকের ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ: যখন ব্রণ দেখা দেয়, খোঁটাখুঁটি করবেন না। ফুসকুড়ির মাথা তুলে আনলে সেগুলো দ্রুত মিলিয়ে যায়, রাতে শোবার আগে গরম সেঁক দিন, এরপর শুকনো মাস্ক দিয়ে আক্রান্ত স্থানে মৃদু চাপ দিন।