মোবাইল ফোন অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। তবে মোবাইল ব্যবহারকারীদের ফোনের চার্জ নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট অভিযোগ।
স্মার্টফোনগুলোরতো আরো দুরাবস্থা। ফোনে চার্জ দিতেই চার্জ যায় ফুরিয়ে। তাছাড়া রয়েছে চার্জারের পিন নিয়ে সমস্যা। কারণ চার্জারের পিনে কোনো সমস্যা থাকলে সেটি অকেজো হয়ে যায়।
তাই তারবিহীন চার্জ ব্যবস্থা প্রবর্তন প্রযুক্তিবিদদের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জেও উত্তরণের জয়যাত্রা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
অটোনামা ডি বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একদল তরুণ গবেষক সেই আশার পালে হাওয়া দিচ্ছেন। সম্প্রতি তারা দুইটি পরস্পর পৃথক বর্তনীর মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক শক্তি সরবরাহের এক অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন।
যদিও এটি নিয়ে এখনও পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। তবে গবেষকরা এই বিষয়ে বেশ আশাবাদী। অবশ্য ইতিমধ্যে ডকিং চার্জার ব্যবস্থা বাজারে চলে এসেছে। এই ডকের উপর ফোনটি রাখলেই চার্জ হয়।
তারা আবিষ্কৃত ব্যবস্থায় মূলত ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ (আয়রনের যৌগ) ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী উপাদান (যেমন: কপার বা তামা) একত্রে স্তরীভূত করেন।
তারা নতুন সৃষ্ট পদার্থের নাম দিয়েছেন “মেটা উপাদান”। এটি বিদ্যুতের নিঃসরণ ও সংরক্ষণে একসাথে একই সময়ে কাজ করে।
ফলে দূরবর্তী দুইটি বিদ্যুৎ বর্তনীর মধ্যে অতি সহজেই বিদ্যুৎ আদান প্রদান করতে পারে। এক্ষেত্রে গবেষণাগারে তারা দুইটি আলাদা বর্তনীকে মেটা উপাদানের খোলস দিয়ে আবৃত করেন।
এরপর একটি বর্তনীতে তড়িৎ সরবরাহ করা হয়। কিছু সময় পর অপর বর্তনীতে তড়িৎ পরিমাপ করলে দেখা যায়, সেখানেও বৈদ্যুতিক শক্তি স্থানান্তরিত হচ্ছে।
এই বিদ্যুৎ শক্তি সরবরাহের হারও অনেক বেশি (স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৩৫ গুণ)। তবে তারা ধারণা করছেন,পারিপার্শ্বিক অবস্থা আর উপাদানের উৎকর্ষ সাধন করলে আরও অধিক হারে শক্তি স্থানান্তর সম্ভব।
তাদের ধারণা, মেটা উপাদানের খোলস বর্তনী দুইটিতে ব্যবহারের ফলে তাদের মাঝে দূরত্ব তাত্ত্বিকভাবে শূন্য হয়ে যায়। ফলে তারা একত্রে থাকা অবস্থায় যেমন শক্তি স্থানান্তর করত, এক্ষেত্রেও তাই ঘটবে।
তারা আশা করছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনেও হয়তো পিনের সংযোগ ছাড়াই বিদ্যুৎ পাঠানো যাবে। আর ফুরিয়ে হয়ে যাবে চার্জ নিয়ে সব অভিযোগ।