শুক্রবার সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। যেখানে টসে হেরে আগে ব্যাট ৬৮ ওভারেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা, স্কোরবোর্ডে তুলে ২৮০ রান। শতক হাঁকান কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া। জবাব দিতে নেমে ভালো নেই বাংলাদেশও, ৩২ রানেই হারিয়েছে ৩ উইকেট।
মাত্র ৯ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। তৃতীয় ওভারে বিশ্ব ফার্নান্দোর এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন জাকির হাসান। আউট হন ৮ বলে ৯ রান করে। রয়েসয়ে পরের ওভার পাড়ি দিলেও পঞ্চম ওভারে আবারো আঘাত হানেন বিশ্ব। এবার এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, করেন ৫ রান
অষ্টম ওভারে তৃতীয় উইকেট তুলে নেন কাসুন রাজিথা। তার শিকার অভিজ্ঞ মুমিনুল হক। থিতু হবার সুযোগ পাননি তিনিও, আউট হন ৫ রানে। পরের দুই ওভারে আর কোনো উইকেট না হারালে ৩ উইকেটে ৩২ রানে দিনশেষ করে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয় ৩৪ বলে ৯ ও তাইজুল দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন রানের খাতা খুলে।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করা লঙ্কানদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন খালেদ। উপলক্ষ এনে দেন দ্বিতীয় ওভারেই। ফেরান নিশান মাদুষ্কাকে ৯ বলে ২ রানে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে থিতু হবার চেষ্টা করেন দিমুথ করুনারত্নে ও কুশল মেন্ডিস। তবে ১২তম ওভারে এসে দুজনকেই আটকে দেন খালেদ। দলকে এনে দেন জোড়া উদযাপনের উপলক্ষ।
ওভারের দ্বিতীয় বলে কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দেন কুশল। তার ইনিংস শেষ হয় ২৬ বলে ১৬ রানে। আর শেষ বলে ফেরেন থিতু হয়ে যাওয়া করুনারত্নে। ৩৭ বলে ১৭ রান করা করুনারত্নের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন খালেদ। তবে বিপদ সেখানে কাটেনি। ১৪তম ওভারের শেষ বলে শ্রীলঙ্কার চতুর্থ উইকেট তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বল হাতে নয়, দুর্দান্ত রান আউটে দলকে উজ্জীবিত করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ফেরান অভিজ্ঞ এঞ্জেলা ম্যাথিউসকে। ৭ বলে ৫ করে আউট হন ম্যাথিউস। এমতাবস্থায় অভিজ্ঞ চান্দিমালও (৯) ফেরেন হতাশ করে। বিপদ বাড়িয়ে ১৬.২ ওভারে শরিফুলের বলে ক্যাচ দেন মিরাজকে। মাত্র ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। প্রথম সেশন শেষ হয় ৫ উইকেটে ৯২ রানে।
তবে এরপর আরো একবার উদযাপনে মাততে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ৪০ ওভার। ৫৭ তম ওভারে কামিন্দু ফিরলে উদযাপনের উপলক্ষ পায় টাইগাররা। মাঝের সময়ে কামিন্দু আর ধনঞ্জয়া মিলে বেশ ভালোই নেন টাইগার বোলারদের পরীক্ষা। উইকেট দেয়া তো দূর, রান তুলেন ওয়ানডের মতো করে।
দ্বিতীয় সেশনে উইকেটের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। চা বিরতির পর এসে যখন ফের উইকেটের দেখা পেল টাইগাররা, ততক্ষণে জুটিতে এসেছে ২৪৫ বলে ২০২ রান।
দলকে বহুল কাঙ্খিত উইকেট এনে দেন নাহিদ রানা। কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাহিদ, তুলে নেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম উইকেট। দ্বিতীয় আর তৃতীয় উইকেটের দেখা পেতে অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি, এক ওভার পরই তুলে নেন লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকেও। পরে ফেরান প্রতাভকেও।
মাঝের এই সময়ে ধনঞ্জয়া আর মেন্ডিস নিজেরাই যেন নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেন। কে কার আগে সেঞ্চুরি তুলে নেন, সেই প্রতিযোগিতায় যেন মেতে উঠেন। যেখানে এগিয়ে যান কামিন্দুই, ১২৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট শতক।
১ বল বেশি খেলে শতক স্পর্শ করেন ধনঞ্জয়াও। যা ছিল লঙ্কান অধিনায়কেরও ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। দুজনেই নাহিদ রানাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পৌঁছান তিন অংকের ঘরে। তবে এখানেই কেবল মিল নয়, দুজনই আবার ফেরেন সেই নাহিদ রানার শিকার হয়েই। আবার দুজনই আউট হন সমান ১০২ রানে।
পর পর দুই ওভারে দুই উইকেট নেয়ার পর ৬১তম ওভারে তৃতীয় উইকেটও তুলে নেন নাহিদ। এবার তার শিকার প্রতাভ জয়সুরিয়া। তাতে ৬১ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৭০ রান। বেরিয়ে আসে তাদের ইনিংসের লেজ। শেষ পর্যন্ত ২৮০ রানেই থামে লঙ্কানদের ইনিংস।