সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ঢাকাকে উড়িয়ে শীর্ষে রংপুর

ক্রিকেট দুনিয়া February 6, 2024 1,572
সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ঢাকাকে উড়িয়ে শীর্ষে রংপুর

মিরপুর মানেই টস জেতা সাথে ম্যাচটাও জিতে নেয়া । একটি নয়, দুটি নয়, পরপর আট ম্যাচে একই কাণ্ড মিরপুর শের-ই-বাংলায়। আগে যারা টস জিতবে তারাই জিতবে ম্যাচ! এমন সমীকরণে বিপিএলে প্রথম চার দিনে আট ম্যাচের ফল বের হয়েছিল। সিলেট পর্ব শেষে বিপিএল আবারও ফিরেছে ঢাকায়। ফিরেই টস সমীকরণ পাল্টাল রংপুর রাইডার্স। এদিন দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে টস হারলেও রংপুর ম্যাচ জিতেছে হেসেখেলে।


মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ঢাকা। ব্যাটিংয়ে নেমে তাসকিন-শরিফুলদের ১৭৬ রানের লক্ষ্য দেয় সাকিব-মাহেদীরা। জবাব দিতে নেমে ১১৫ রানেই অলআউট হয় ঢাকা। এতে ৬০ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর।


এদিন রংপুরের হয়ে ওপেনার রনি তালুকদারের সঙ্গে ইনিংস গোড়াপত্তনে নামেন পাকিস্তানি বাবর আজম। ইনিংসের প্রথম তিন ওভার পর্যন্ত কিছুটা রক্ষণাত্মক খেললেও চতুর্থ ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন এই জুটি। ফলে দ্রুতই বাড়তে থাকে রংপুরের রানের গতি। পাওয়ার প্লে’তেই দলীয় ৫০ পেরিয়ে যায় নুরুল হাসান সোহানের দল।


এরপর আরেকটু আক্রমণাত্মক হওয়ার আভাস দিয়ে দলীয় ৬৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রনি। রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। আরাফাত সানির বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়ার আগে ৬ চার ও এক ছক্কায় ২৪ বলে ৩৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন এই ওপেনার।


খানিকটা চমক দিয়েই তিনে ব্যাট করতে নামেন চলতি বিপিএলে রানখরায় থাকা সাকিব আল হাসান। বাবর আজমের সঙ্গে জুটি বেঁধে রংপুরের ইনিংস মেরামতের কাজ সারতে থাকেন। এদিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে কিছুটা ক্ষুর্ধাতই মনে হচ্ছিল। যে কারণে ক্রিজে নেমে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালাতে থাকেন সাকিব। সাকিব-বাবরের ব্যাটে ভর করে ১৩তম ওভারেই দলীয় ১০০ পার করে রংপুর।


এরপর ইনিংসের ১৫তম ওভারে বাবরকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ঢাকার দলপতি মোসাদ্দেক। ঢাকার কাপ্তানের অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের নিচু বল পুল করতে গিয়ে ডিপ-ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন বাবর। সেখানে সহজ ক্যাচ নেন গুলবাদিন। সাজঘরে ফেরার আগে ৪ বাউন্ডারিতে ৪৩ বলে ৪৭ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন দ্য গ্রিন ম্যানদের সাবেক এই অধিনায়ক।


একই ওভারে সাকিবকেও ফেরান মোসাদ্দেক। ডিপ-মিড উইকেটে নাঈম শেখের হাতে ক্যাচ দিয় ফেরার আগে ৬ ছক্কা ও ১ চারে ২০ বলে ৩৪ রানের মারকাটারি এক ইনিংস খেলেন ২১ রানে জীবন পাওয়া সাকিব।


এরপর ব্যাট করতে নেমে দ্রুতই ফিরেছেন আজমউল্লাহ ওমরজাই। ৭ বলে মাত্র ৩ রানে অভিষিক্ত সাব্বিরের কাছে কট অ্যান্ড বলড হয়ে ফিরেছেন তিনি।


এরপর বাকি কাজটা সারেন দলপতি সোহান ও আফগান মোহাম্মদ নবি জুটি। সোহানের ১০ বলে ১৬ আর নবি ১৬ বলে ২৯ রানের ক্যামিওতে এই পুঁজি পেয়েছে রংপুর।


বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় দুর্দান্ত ঢাকা। ৫ বলে ১ রান করে আউট হন ওপেনার সাব্বির হোসেন। এদিন ব্যাটে আলো ছাড়াতে পারেনি পাকিস্তানি তরুণ ব্যাটার সাইম আইয়ুব। ৮ বলে ২ রান করে মাহেদীর দ্বিতীয় শিকার হন তিনি।


কিন্তু অপর প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট চালাতে থাকেন আরেক ওপেনার নাঈম শেখ। ৯ বলে ২ রান করে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন অ্যালেক্স রোস। এরপর ৩১ বলে ৪৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন নাঈম।


এরপর শুরু হয় দুর্দান্ত ঢাকার উইকেট মিছিল। গুলবাদিন নাইব (১৩), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১) ও চতুরাঙ্গা ডি সিলভা ৮ রানের আউট হন। তাসকিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন ইরফান শুক্কুর।


৮ বলে ১৫ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেন তাসকিন। শেষ দিকে শরিফুল ইসলাম (০) এবং ইরফান শুক্কুর ২১ রানের আউট হলে ১২ বল হাতে থাকতেই ১১৫ রানে অলআউট হয় দুর্দান্ত ঢাকা। এতে ৬০ রানের বড় জয় পায় রংপুর।


রংপুর রাইডার্সের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন সাকিব আল হাসান। এ ছাড়াও মাহেদী হাসান, সালমান ইরশাদ ও হাসান মাহমুদ দুটি করে উইকেট শিকার করেন।