নাটকীয় ম্যাচে ডাবল সুপার ওভারে আফগানিস্তানকে হারাল ভারত

ক্রিকেট দুনিয়া January 18, 2024 3,056
নাটকীয় ম্যাচে ডাবল সুপার ওভারে আফগানিস্তানকে হারাল ভারত

রোহিতের সেঞ্চুরিতে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান পুজি পায় ভারত । এরপর জবাবে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানও করলো ২১২ রান । খেলা গড়ালো সুপার ওভারে। সেখানে আফগানিস্তান প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করলো ১৬ রান। জবাবে রোহিত শর্মা, জয়সওয়ালরা মিলেও করলেন ১৬ রান। আরও একবার সুপার ওভারে গড়ালো খেলা। সেখানে বাজিমাত করলো ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ১১ রান করে তারা। জবাব দিতে নেমে তিন বলে ১ রান করে ২ উইকেটই হারিয়ে বসে আফগানরা। জিতে যায় ভারত। ভারতের মাটিতে ইতিহাস গড়া হলো না আফগানিস্তানের ।


বেঙ্গালুরুতে নিয়মরক্ষার তৃতীয় ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় ভারত। সিদ্ধান্তটা বিপরীতে যায়। ফরিদ আহমেদের বোলিং তোপে পড়ে দিগ্বিদিক হয়ে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। আফগান পেসার দুই ওভারে তিনটি উইকেট তুলে নেন। তৃতীয় ওভারে পরপর যশস্বী জওসওয়াল ও বিরাট কোহলিকে ফেরান তিনি। নিজের পরের ওভারে ফরিদ খালি হাতে ফেরান সাঞ্জু স্যামসনকেও। মাঝে শিবম দুবে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে।


পঞ্চম ওভারে ২২ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া ভারতকে টেনে তোলেন রোহিত শর্মা ও রিংকু সিং। প্রথম দুই ম্যাচে ডাক মারা ভারতীয় অধিনায়ক সেঞ্চুরিও মেরেছেন। রিংকুর সঙ্গে তার জুটি ছিল অবিচ্ছিন্ন ১৯০ রানের।


৪১ বলে ফিফটি করা রোহিত তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান আর ২৩ বল খেলে। ৬৪ বলে ১০ চার ও ৬ ছয়ে শতকের দেখা পান তিনি। রিংকু ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন।


এই দুজনের ব্যাটে ৪ উইকেটে ২১২ রানের বড় সংগ্রহ করে ভারত। রোহিত ৬৯ বলে ১১ চার ও ৮ ছয়ে ১২১ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৩৯ বলে ৬৯ রানে খেলছিলেন রিংকু, ২ চার ও ৬ চার ছিল তার ইনিংসে।


জবাব দিতে নেমে আফগানিস্তান ভারতের ঠিক উল্টো গতিতে শুরু করে। রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান উদ্বোধনী জুটিতে একশ ছাড়ানোর পথে ছিলেন। কিন্তু ১১তম ওভারে ৯৩ রানে তাদের জুটি ভেঙে যায়। কুলদীপ যাদব ৫০ রানে গুরবাজকে থামিয়ে ব্রেকথ্রু আনেন। ওয়াশিংটন সুন্দর ১৩তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন। পরপর ইব্রাহিম ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে থামান। অধিনায়ক ইব্রাহিমও ৫০ রান করেন।


এরপর গুলবাদিন নাইব ও মোহাম্মদ নবীর ক্যামিও ইনিংসে ভারতকে চোখ রাঙায় আফগানিস্তান। ১৪তম ওভারে আবেশ খানকে দুটি ছয় ও এক চার মেরে ২০ রান তোলেন গুলবাদিন। পরের দুই ওভারে ঝড় তোলেন নবী, ১৭ রান করে যোগ হয় স্কোরবোর্ডে।


ছয় বলের মধ্যে দুটি উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় আফগানিস্তান। ১৬ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে থামেন নবী। গুলবাদিন সিঙ্গেল নিতে গেলে নন স্ট্রাইকার্স এন্ডে রান আউট হন করিম জানাত।


তবে গুলবাদিন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রানরেট নিয়ন্ত্রণে রাখেন। শেষের আগের দুই ওভারে ২৭ রান তোলেন তিনি।


তাতে শেষ ওভারে ১৯ রান প্রয়োজন ছিল। মুকেশ কুমারের দুটি ওয়াইড ভারতকে হতাশ করে। আর গুলবাদিন চার ও ছয় মেরে ব্যবধান কমান। শেষ দুই বলে পাঁচ রান দরকার ছিল। গুলবাদিন দুটি করে রান নিলে সমতায় শেষ হয় স্কোর।


সুপার ওভারে প্রথম বলে আফগানিস্তান উইকেট হারালেও নবী ও গুরবাজ ছয় ও চার মেরে ১৬ রান তুলতে অবদান রাখেন।


জয়সওয়ালকে নিয়ে রোহিত ক্রিজে নামেন। আজমতউল্লাহর প্রথম দুটি বলে সিঙ্গেল নেন দুজনে। পরে টানা দুটি ছক্কা মারেন রোহিত। পঞ্চম বলে একটি সিঙ্গেল নিয়ে রিটায়ার্ড আউট হন রিংকুকে সুযোগ করে দিতে। তার এই সিদ্ধান্তে হতভম্ব হয়ে আম্পায়ারের দ্বারস্থ হন আফগানরা। নিয়মের মধ্যে থাকায় বিষয়টি আর আগায়নি। জয়সওয়াল সিঙ্গেল নিয়ে সমতা ফেরালে আরেকটি সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ।


ফরিদের বলে রোহিত ছয় ও চার হাঁকান। তৃতীয় বলে অধিনায়ক সিঙ্গেল নেন। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে আউট হন রিংকু ও রোহিত। ১১ রান তোলে ভারত।


১২ রান করতে নেমে প্রথম বলে নবী রবি বিষ্ণয়ের শিকার হন। তৃতীয় বলে বরাদ্দ থাকা দ্বিতীয় উইকেট হারায় আফগানিস্তান। গুরবাজ ক্যাচ দেন রিংকুকে।