শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর। গত নয় আসরে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ঘরোয়া লিগটি। তবে এর মধ্য দিয়েও বেশকিছু তারকা ক্রিকেটার বেরিয়েছে লিগটি থেকে। দেখে নেয়া যাক সেসব তারকাদের।
ঘরোয়া ক্রিকেটকে আরও সমৃদ্ধ করা এবং নতুন খেলোয়াড় তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১২ সালে বিপিএলের যাত্রা শুরু হয়। তবে বিপিএলের গত ৯ আসর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে খুব বেশি তারকা উঠে আসেনি। কয়েকজন এই টুর্নামেন্টে ভালো করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিলেও ধরে রাখতে পারেননি নিজের জায়গা। তবে এই টুর্নামেন্ট থেকে লাভবান হয়েছেন বেশ কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটার।
তাসকিন আহমেদ: ২০১৩ সালে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে অন্যতম চমক ছিলেন তাসকিন আহমেদ। সেবার চট্টগ্রামের দলে জায়গা পেলেও শুরুর দিকে তেমন সুযোগ পাননি এই ক্রিকেটার। তবে তাসকিন তাক লাগিয়ে দেন সেমিফাইনালে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে। ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে বিপিএল শেষ করেন তাসকিন। পরের বছরই তাসকিনের ডাক পড়ে জাতীয় দলে। আর অভিষেক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে জাত চেনান এই পেসার। ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেলেও তাসকিন বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্যতম সেরা পেসার।
তাওহীদ হৃদয়: বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের কাণ্ডারি ভাবা হয় তাওহীদ হৃদয়কে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার সেই আসরের পর থেকেই বেশ আলোচনায় ছিলেন। তবে জাতীয় দলের নির্বাচকদের নজর ঠিকঠাক কাড়তে পারছিলেন না এই ক্রিকেটার। সুযোগটা পেলেন গত বিপিএলের পর। বিপিএলের গত মৌসুমে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। দলকে ফাইনালে তোলার ক্ষেত্রে অনেক বড় অবদান রেখেছেন এই ক্রিকেটারের। ২০২৩ বিপিএলে ১২ ইনিংস ব্যাট করে ৩৬.৬৩ গড় ও ১৪১.৪১ স্ট্রাইক রেটে ৪০৩ রান করেছেন হৃদয়। কোনো সেঞ্চুরি না থাকলেও ফিফটি হাঁকিয়েছেন পাঁচটি। বিপিএলে এমন অনবদ্য পারফরম্যান্সের পরই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ওয়ানডে দলে ডাক পান হৃদয়। জাতীয় দলে আসার পর থেকে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন হৃদয়। দলের ভবিষ্যৎ তারকাদের একজন মনে করা হয় তাকে।
ডেভিড মালান: ডেভিড মালান এখন বিশ্বক্রিকেটের বেশ পরিচিত নাম। ইংল্যান্ডের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন এই ক্রিকেটার। দুর্দান্ত বাঁহাতি ব্যাটার হিসেবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি রয়েছে তার। অথচ ঠিক ৮ বছর আগেও মালান ছিলেন নেহায়েতই একজন ঘরোয়া ক্রিকেটার। ২০১৬ সালে ২৮ বছর বয়সে বিপিএল খেলতে এসে ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় মালানের। সেবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ১৪ ম্যাচ খেলে ৫ ফিফটি এবং ১ সেঞ্চুরিতে ৪৯৮ রান করেছেন এই ক্রিকেটার। বিপিএল থেকে নজর কেড়ে পরের বছরই জাতীয় দলে ডাক পান মালান। বর্তমানে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের সেরা তারকাদের একজন মালান।
উইল জ্যাকস: ইংল্যান্ডের তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটার উইল জ্যাকসের উত্থানটাও বিপিএল থেকে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টে খেলতে এসে চমক দেখিয়েছেন তরুণ ওপেনার। সেবারের আসরে ১১ ম্যাচ খেলে ৪ ফিফটিতে ৪১৪ রান করেন তিনি। তরুণ ক্রিকেটারের দুর্দান্ত ব্যাটিং নজর এড়ায়নি ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের। পরের মাসেই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পান এই ক্রিকেটার। ইংলিশ ক্রিকেটের অনেক বড় নক্ষত্র ভাবা হচ্ছে ২৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারকে।
আহমেদ শেহজাদ: পাকিস্তান জাতীয় দলে আরও আগেই অভিষেক হলেও নিয়মিত হতে পারছিলেন না আহমেদ শেহজাদ। সেই গেরো ভাঙে বিপিএলের প্রথম মৌসুমের পর। ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে বরিশাল বার্নার্সের হয়ে খেলেছিলেন পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার। প্রথম আসরেই রীতিমতো চমক দেখিয়েছেন এই ক্রিকেটার। ক্রিস গেইলের মতো বিধ্বংসী ব্যাটারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেও আলো কেড়েছিলেন তরুণ শেহজাদ। এই টুর্নামেন্টের পরই আবারও জাতীয় দলের রাডারে আসেন শেহজাদ। ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলেছেন শেহজাদ।
সূত্রঃ সময় টিভি অনলাইন