

২৭ বছর বয়সে দেশের হয়ে টেস্ট জার্সি গায়ে তোলা আমের জামালের উঠে আসার গল্পটা এত সহজ ছিল না। একটা সময় সংসার চালানোর জন্য গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে তুলে নিয়েছিলেন। করতে হয়েছে রাইড শেয়ারিংয়ের কাজ । কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি টানটা একবিন্দু কমেনি। এখন এই অলরাউন্ডার রীতিমতো পাকিস্তানের তারকা বনে গেছেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল ডানহাতি অলরাউন্ডার আমের জামালের। এরপরে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। চলতে থাকা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকও হয়েছে জামালের। সেখানেই নিজেকে তুলে ধরেছেন তিনি। রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরামের পরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক সিরিজে ১০০ এর ওপরে রান ও ১০ এর ওপরে উইকেট পেয়েছেন জামাল।
তৃতীয় টেস্টে দলের বিপর্যয়ের মুহূর্তে ব্যাট করতে নেমে প্রথম টেস্ট ফিফটি হাঁকালেন। শেষ পর্যন্ত খেললেন ৮২ রানের ক্যারিয়ার সেরা দারুণ এক ইনিংস। তার ব্যাটে ভর করে তিনশো পেরোয় পাকিস্তানের সংগ্রহ।
এরপরে জামাল নিজের জীবনের কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টের পরে একটি ভিডিওতে জামালের উঠে আসার গল্প প্রচার করা হয়। সেখানে জামাল বলেন, ‘আমি কখনও আশা হারাইনি। অনেকে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে বলেছেন। কিন্তু হাল ছাড়িনি আমি। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এগিয়ে গিয়েছি।‘
এক সময় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছিলেন আমের জামাল। কিন্তু এরপরে আর ক্যারিয়ারে আশার ফুল ফোটেনি। তবুও লেগে ছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে পরিবার চালানোর জন্য ব্যাংকঋণ নিয়ে ট্যাক্সি কেনেন তিনি। ভোর ৫টা থেকে শুরু করে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাইড শেয়ারিং করতেন। ফাঁকে নাশতা সেরে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বোলিং অনুশীলন করতেন তিনি। এরপরে ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আবারও ট্যাক্সি চালাতেন। এভাবেই চালিয়ে গেছেন নিজের জীবনের চাকা।
এই বিষয়ে আমের জামাল বলেন, ‘আমার জীবন সংগ্রাম আমাকে আরও এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। এখন সবকিছুই আমার কাছে মূল্যবান মনে হয়। আমি আমার জীবনকে উপভোগ করি প্রতিটি মুহূর্তে।‘









