আরো উন্নত ক্যামেরা? বড় এবং আরো উন্নত ব্যাটারি? শক্তিশালী প্রসেসর? হ্যাঁ, এসবই নতুন নতুন ফিচার যা আমরা ২০১৮ সালে বাজারে আসার অপেক্ষায় থাকা স্মার্টফোনগুলো থেকে আশা করতে পারি। এখানে রইল এমনই ৯টি ফিচারের কথা যেগুলো ২০১৮ সালে কম দামের স্মার্টফোনেও যুক্ত হতে পারে।
১. ১৮:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও হবে আদর্শ
এলজির এলজি জি৬ ফোনটিতে সর্বপ্রথম ১৮:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওর ডিসপ্লে যুক্ত করা হয়েছিল। এরপর অনার, শাওমি, ভিভো তাদের মধ্যম বাজেটের প্রায় প্রতিটি ফোনেই ১৮:৯ রেশিওর ডিসপ্লে যুক্ত করা শুরু করে।
২. শক্তিশালী প্রসেসর
কোয়ালকম ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এর ফ্ল্যাগশিপ স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ প্রসেসর বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে আমরা আশা করতে পারি যে ২০১৮ সালের প্রতিটি ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসেই ওই লেটেস্ট প্রসেসরটি যুক্ত করা হবে। আর এর আগের প্রজন্মের ৮৩৫ প্রসেসরটি আরো কম দামের স্মার্টফোনে যুক্ত করা হবে। এখন ৪০ হাজার টাকার কম দামের কোনো স্মার্টফোনেই স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ প্রসেসর দেওয়া হয় না। কিন্তু নতুন স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ জনপ্রিয় হয়ে উঠলে আগেরটি আরো কম দামের স্মার্টফোনেও দেওয়া হবে।
৩. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
অ্যাপল, গুগল, অ্যামাজোন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর ক্রমাগত গুরুত্ব দেওয়ায় অন্যরাও তাদের ডিভাইসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যোগ করবে। অনার ইতিমধ্যেই এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত স্মার্টফোন ভিউ ১০ বাজারে এনেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই হয়ে উঠবে স্মার্টফোনের বাজওয়ার্ড। আর সম্প্রতি গার্টনারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের মধ্যে প্রায় ৮০% স্মার্টফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে। ২০১৭ সালের ১০% স্মার্টফোনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছিল।
৪. অ্যান্ড্রয়েড ওরিও
বর্তমানে সনি এক্সপেরিয়া, অনার ভিউ ১০, নোকিয়া এবং ওয়ান প্লাস সহ অল্পকিছু স্মার্টফোনে অ্যান্ড্রেয়েডের লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম ৮.০ ওরিও আছে। ২০১৮ সালে বেশিরভাগ ফোনেই এই অপারেটিং সিস্টেম চলে আসবে।
৫. ফেস রিকগনিশন
অ্যাপল আইফোনে যেই প্রযুক্ত প্রথমে আসে সেটিই পরে অন্যান্য ফোনেও আসে। যেমন, ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম অ্যাপল আইফোন ৫এস-এ ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যুক্ত হয়। এরপর অন্যান্য ফোনেও তা চলে আসে। ঠিক তেমনি ২০১৭ সালে অ্যাপল আইফোন এক্স-এ এসেছ ফেসআইডি। যা ইতিমধ্যেই অন্যান্য ফোনেও দেখা যাচ্ছে। অপ্পো এবং ইনিফিনিক্স ইতিমধ্যেই তাদের মধ্যম বাজেটের ফোনে ফেস আইডি যুক্ত করা শুরু করে দিয়েছে। ওয়ান প্লাস তো ফেস আইডি-কে তাদের অনন্য একটি বৈশিষ্ট্যই বানিয়ে ফেলেছে। ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তি ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডি-র স্থানটি দখলে করে নিবে।
৬. ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর আরো উন্নত হবে
ফেস আইডির দাপটে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর বিদায় নিবে এমনটা নয়। বরং ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর আরো উন্নত হবে। বিশেষ করে ডিসপ্লের কাঁচের নিচেই এখন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যুক্ত করা হবে। সিইএস ২০১৮-তে ইতিমধ্যেই ভিভো ডিসপ্লে-র কাঁচের নিচে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। ২০১৮ সালের স্যামসাংয়ের ফ্ল্যাগশিপের ডিভাইসগুলোতেও নতুন এই প্রযুক্তি যুক্ত করা হতে পারে। ২০১৮ সালের বেশিরভাগ স্মার্টফোনেই ডিসপ্লের কাঁচের নিচেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যুক্ত করা হবে আশা করা হচ্ছে।
৭. সবখানেই ডুয়াল ক্যামেরা
সেলফি ক্যামেরা প্রথমে আসার কিছুদিনের মধ্যেই সব স্মার্টফোনে যুক্ত হতে থাকে। ঠিক তেমনটিই ঘটছে ডুয়াল ক্যামেরার বেলায়ও- রিয়ার এবং ফ্রন্ট উভয় ক্ষেত্রেই। ২০১৭ সালে পেছনে ডুয়াল ক্যামেরার যুক্ত করার বিষয়টি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে ফ্রন্ট ডুয়াল ক্যামেরা খুব বেশি একটা জনপ্রিয় হয়নি। তথাপি ২০১৮ সালে ডুয়াল ক্যামেরা পুরোপুরি মূলধারায় চলে আসতে পারে। এমনকি কম দামের স্মার্টফোনেও ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ চলে আসতে পারে।
৮. ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট এবং টাইপ-সি পোর্ট
অনেক ডিভাইসেই এই প্রযুক্তি দেখা গিয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগেরই দাম ৩০ হাজার টাকার নিচে। তথাপি স্মার্টফোন ইউজাররা ব্যাটারি লাইফ কম হওয়া এবং ফোন চার্জ করতে বেশি সময় লাগার বিষয়ে অভিযোগ করতে থামবে না। কুইক, ফাস্ট বা ড্যাশ- যাই বলুন না কেন নতুন এই চার্জিং প্রযুক্তি সব স্মার্টফোনেই চলে আসবে।
৯. নতুন হেডফোন
পুরোনো অডিও জ্যাকের জায়গায় নতুন প্রযুক্তি আসবে। যা ইতিমধ্যেই অ্যাপল ও গগুলের স্মার্টফোনগুলোতে দেখা যাচ্ছে।