শ্রাবণ মাসে আকাশজুড়ে থাকে কালো মেঘের ভেলা। ধীরে ধীরে গুমট পরিবেশে হঠাৎ বজ্রের ঝলকানি ও বিকট শব্দে কেপে ওঠে প্রকৃতি। এরপর আকাশের ঠিকরে ছিটিয়ে দেয়া বৃষ্টি যেন পরিবেশ শান্ত করে দেয়। আর কাঁদা মাটির গন্ধের নেশা যেন এনে দেয় শরীর ও মনে প্রশান্তির ছোয়া।
আর ঝুম বৃষ্টিতে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা খাওয়ার উৎসব চলে ঘরে ঘরে।
তারপরও বর্ষায় সমস্যারও কিন্তু কমতি নেই। বৃষ্টির সঙ্গে পানি জমা আর কাঁদা রাস্তায় আছাড় খাওয়া যেমন থাকে, তেমন বিভিন্ন রোগ-বালাইও দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কমে যায়। ফলে বিভিন্ন রোগ যেমন: ঠাণ্ডা লাগা, চিকনগুনিয়া, ডেঙ্গু, সর্দি-কাশি, পানিবাহিত ইনফেকশান, ম্যালেরিয়া, চর্মরোগ ও নানাবিধ সংক্রমণ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
সেই সঙ্গে হজমের সমস্যা এবং মশার কামড় ঘটিত নানাবিধ রোগ তো রয়েছেই। তাই বর্ষায় রোগ-বালাই থেকে বাঁচার কিছু সাধারণ উপায় তুলে ধরা হল:
* শ্রাবণে মশার উপদ্রব বাড়ে। এক্ষেত্রে মশাদের কাবু করতে কাজে লাগাতে পারেন নিমপাতাকে। শুকনো করা নিমপাতা একসঙ্গে করে জ্বালিয়ে দিন। দেখবেন অল্প সময়ের মধ্যেই একটা মশাকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
* বর্ষায় পায়ে এবং শরীরে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই বছরের এই সময় বেশি করে পায়ের খেয়াল রাখতে হবে। নোংড়া পানি ঠেলে বাড়ি এলে গরম পানিতে অল্প করে ডেটল ফেলে ভালো করে পা ধুতে হবে। সেই সঙ্গে নখের মাঝে যাতে ময়লা জমে না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষে করে ডায়াবেটিক রোগীরা বেশি করে এই সময় পায়ের দিকে নজর নিন।
* শ্রাবণের ঝুম বৃষ্টিতে আদা, হলুদ এবং গ্রিন-টি বেশি করে খেতে হবে। কারণ এই তিনটি খাবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
* বর্ষাকালে শরীরকে ভেতর এবং বাইরে থেকে চাঙ্গা রাখতে সপ্তাহে একবার নিমতেল সারা শরীরে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর হলকা গরম পানিতে গোসল করুন। এমনটা করলে স্কিন ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমবে। অন্যদিকে সারা শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যাবে এবং রোগাক্রান্ত হওয়ার আশংকা কমে যাবে।