বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে বিরাট-আনুশকার। মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিল এই খবর। যদিও বিরাট বা আনুশকা বরাবরই চুপ ছিলেন। কিছুদিন পরই আবার তাঁদের দেখা যায় এক সঙ্গে।
বিরাট-আনুশকা জানান, তাঁরা ‘ব্রেক’ নিয়েছিলেন সম্পর্ক থেকে। কিন্তু কখনই ব্রেক আপের কথা ভাবেননি। শুধু বিরাট-আনুশকা নন, এই প্রজন্মের কাপলরা প্রায়ই এই ‘ব্রেক’ নিয়ে থাকেন। ব্রেক নেওয়া ব্যাপারটা ঠিক কী? দু’জন-দু’জনের থেকে কিছু দিন আলাদা থেকে, নিজেদের কিছুটা সময় দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা। মনোবিদরাও রিলেশনশিপ কাউন্সেলিং-এর সময় ব্রেক নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কখন ব্রেক নেবেন
যদি মনে করেন কোনও সম্পর্কে থাকতে থাকতে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন, একটু স্পেস প্রয়োজন, তখন কিছু দিনের জন্য ব্রেক নেওয়া আপনার জন্য আদর্শ। অথবা অনেক সময় জীবনে এক সঙ্গে প্রচুর ব্যস্ততা এসে পড়ে, তখন যদি পার্টনারের উপস্থিতি কোনও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আসে তা হলেও ব্রেক নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন।
যদি দেখেন সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে আপনি প্রচুর লড়াই করার পরও অনেক ফাঁক থেকে যাচ্ছে, অথচ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে মন থেকে সায় পাচ্ছেন না, তখন ব্রেক নেওয়া যেতে পারে। ব্যাপারটা অনেকটা অনেক দিন কাজ করার পর ক্লান্তি কাটাতে ছুটি কাটাতে যাওয়ার মতো। এতে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। এই ব্রেক হয় আপনাকে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে, নয়তো কেন আপনার জন্য এই সম্পর্ক জরুরি তা বুঝতে সাহায্য করবে।
ব্রেক নেওয়ার অর্থ আপনি বুঝতে পারছেন সম্পর্কে কোনও সমস্যা হচ্ছে এবং তা সমাধান করতে চাইছেন। অনেক সময় দু’জনে কথা বলে, আলোচনা করে যে সমস্যা সমাধান করা যায় না, একে অপরের থেকে দূরে থেকে সে সমস্যা সমাধান করা সহজ হয়। সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া কখনই কিছু সমাধান করে না।
ব্রেক নেওয়া মানে কিন্তু ব্রেক আপ নয়
ব্রেক নেওয়া অনেক ক্ষেত্রে ব্রেক আপের সূচনা করলেও তা কখনই চূড়ান্ত ব্রেক আপ নয়। সম্পর্ক যদি শেষ অবস্থায় পৌঁছে গিয়ে থাকে তা হলে আজ না হয় কাল বিচ্ছেদ অনিবার্য। ব্রেক নিলে অনেক সময় সেই বিচ্ছেদ এড়ানোর সমাধান খুঁজে বের করা যায়। খারাপ হতে থাকা সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এটা শেষ পথ হিসেবে দেখতে পারেন। একে অপরের নম্বর ডিলিট করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে হ্যাঁ, এই সময়ে এমন জিনিস থেকে দূরে থাকুন, যা আপনাদের একে অপরকে মনে করাবে। এতে নিরপেক্ষ ভাবে ভাবনা-চিন্তা করতে পারবেন।
ব্রেক নিয়ে কি অন্য কাউকে ডেট করতে পারেন? এটা কি প্রতারণা?
ব্রেক নিয়ে নিজেকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। যাতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই সময়ে অন্য কোনও সম্পর্কে না জড়ানোই ভাল। এই সময় কাউকে ডেট করতে পারেন। কিন্তু সেই তৃতীয় ব্যক্তিই যদি হয়ে ওঠেন পরে বিচ্ছেদের কারণ, বা ডেট করার জন্যই যদি ব্রেক নিয়ে থাকেন তবে তা অবশ্যই প্রতারণা।
কত দিনের ব্রেক নেওয়া উচিত?
পুরোটাই নির্ভর করতে সমস্যা, এবং আপনারা দুজন সেটাকে কী ভাবে দেখছেন তার উপর। তবে যদি খুব বেশি দিনের জন্য ব্রেক নেন তা হলে সম্পর্ক টেকার সম্ভাবনা কম। কোনও নির্ধারিত সময়সীমা নেই। যদি দেখেন ব্রেক খুব বেশি দিন স্থায়ী হচ্ছে তা হলে বুঝতে হবে আপনার সম্পর্ক শেষ অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। ব্রেক নিলে নিজের অনুভূতি বুঝতে সুবিধা হবে।
ব্রেক নেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুলও হতে পারে
ব্রেক নেওয়ার কিন্তু কিছু ঝুঁকি থাকে। এটা অবশ্যই একটা বড় পদক্ষেপ। যদি দুজনের সিদ্ধান্তে ব্রেক না নেন তা হলে কিন্তু এতে হিতে বিপরীত ফল হতে পারে। আপনার সঙ্গী এতে ভেবে নিতে পারেন আপনি ব্রেক আপ চাইছেন। হতে পারে তার জীবনে অন্য কেউ এসে গেল, অথচ আপনি এখনও ওকেই ভালবাসেন। মনে রাখবেন ব্রেক নিয়ে কিছুটা সময় নেওয়া কিন্তু সম্পর্ক বাঁচানোর শেষ পদক্ষেপ হওয়া উচিত।
আনন্দবাজার।