দিনের দৈর্ঘ্য এখনো বাড়ার ওপরেই আছে। তাই দীর্ঘসময় ধরে সংযমের পর এমন দিনে ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার।.বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া না খাওয়াই ভালো। বরং বুদ্ধিমানের কাজ হবে ফলমূলে মনোযোগী হওয়া। তাই রমজানজুড়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ। আজ থাকছে বেল-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
এই জটিল রোগ নিয়ন্ত্রণে বেল অনন্য। বেলগাছ কিন্তু প্রাচীনকাল থেকেই রোগ সারানোয় ভরসার প্রতীক। ডায়াবেটিস সামাল দিতে বেলের পাতাও ব্যবহার করা যায়। এতে দেহে ‘অক্সাডেটিভ স্ট্রেস’ কমে আসে। এটা প্রমাণিত যে বেলের পাতা খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৫৪ শতাংশ কমে যায়। কাজেই ডায়াবেটিস রোগীরা ইফতারে অবশ্যই বেলের শরবত খাবেন।
শ্বাসযন্ত্রের সুস্থতায়
ঘন ঘন সর্দির সমস্যায় বেলের শরবতে দারুণ উপকার মিলবে। বেলের শরবত ও তিলের তেল মিশিয়ে সামান্য গরম করে তাতে গোলমরিচ আর জিরার গুঁড়া মেশাতে পারেন। এরপর ঠাণ্ডা করে কাচের বোতলে রেখে দিন। মাথার করোটিতে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। খুব দ্রুত সর্দিসহ শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ঠেকাতে
একেবারে গাছপাকা বেল সহজে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেবে। এক মাস বেলের শরবত খেলে পেটের সব বাজে জিনিসই বেরিয়ে যাবে। তবে উপকার পেতে অবশ্যই বিচিগুলো বের করে ফেলতে হবে।
ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রি
যদি জ্বর ছাড়া ডায়রিয়া হয়ে থাকে, তবে ডাক্তারের কাছে ছোটার খুব একটা দরকার নেই। আধাপাকা কিংবা কাঁচা বেলের শরবত খেয়েই পরিত্রাণ পাবেন। কাঁচা বেল শুকিয়ে পাউডার করে বায়ুশূন্য পাত্রে সংরক্ষণ করুন। গুড়ের শরবতে এই পাউডার মিশিয়ে খান। ডিসেন্ট্রি ও ডায়রিয়া সেরে যাবে।
আলসারের চিকিৎসায়
যেহেতু হজমপ্রক্রিয়াকে এই ফল মসৃণ করে, তাই পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা কমিয়ে আনে। গ্যাস্ট্রিক, গ্যাস্ট্রোডিউডেনাল আলসারের মতো বেশ কিছু আলসারের বিরুদ্ধে কাজ করে বেল। তাই ইফতারে শরবত না খেলেই নয়। কাঁচা বেলের নির্যাস কিন্তু পাইলসের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি দিতে পারে।
ত্বকের যত্নে সেরা
কেবল সামান্য চুলকানি দূরই করে না বেল, যন্ত্রণাদায়ক র?্যাশ বা বড় সমস্যাও দূর করতে পারে এই ফল। নিয়মিত বেলের শরবত খেলে একেবারে ভেতর থেকে ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করবে।
বিষমুক্তি
দেহের যাবতীয় বিষ তাড়াতে কিন্তু শক্তিশালী এক অস্ত্র বেল। আর এ কাজটি ঠিকমতো হলে অনেক রোগই দূরে থাকবে। তাই ইফতারে এক বা দুই গ্লাস বেলের শরবত খেতে পারেন।
হিমোগ্লোবিন বাড়ায়
রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এই ফল। এটি এক অনন্য গুণ। রক্তপাত ঘটলে বেল খেতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। যারা রক্ত দিয়েছে তাদেরও বেল খাওয়া উচিত।
চুলের স্বাস্থ্যে
চুলের যেকোনো সমস্যায় বেশ কাজে দেয় বেল। আর যারা চুল ঘন ও শক্তিশালী করতে চায়, তাদের কাছেও বেল রীতিমতো পথ্য।
পুষ্টির আধার
ভিটামিন, খনিজ আর ইলেকট্রোলাইটসের পাওয়ার হাউস এই বেল। এই ফলে আছে অ্যালাকলয়েড, পলিস্যাকারাইড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, বি-সহ আরো অনেক রাসায়নিক উপাদান। আরো আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, প্রোটিন আর ফাইবার।