♦ মেসে থাকা ছেলেদের পেটে ডিমের খামার আর আলুর গোডাউন তৈরি হয়। আলুভর্তা আর ডিম ভাজি মেস মেম্বারদের খাদ্যতালিকায় সবার ওপরে থাকে।
♦ রাত ১২টার পর ঘুমাতে যাওয়া আর বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা—এটা এদের সাধারণ নিয়ম।
♦ এরা কার্ড খেলতে পটু হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কার্ড খেলে কাটিয়ে দিতে পারে।
♦ মাসের প্রথম ১০ দিন এরা চলে রাজার হালে আর শেষ ১০ দিন এদের ধার-দেনা করে চলতে হয়।
♦ এরা একটা সিগারেট তিনজন মিলে খেতে অভ্যস্ত।
♦ মেসের খালা বা বুয়া হলো দুর্দান্ত ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি। এদের উঠতে-বসতে বুয়ার ঝাড়ি হজম করতে হয়।
♦ এরা এক বালতি পানি দিয়ে দিব্যি দুজন মিলে গোসল করে, তবুও পানি থেকে যায়।
♦ এরা ভীষণ অলস টাইপের। বিছানা হলো এদের প্রিয় জায়গা।
♦ এদের কাছে সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় হলো কাপড় কাচা।
♦ পরীক্ষার সময়সূচি বের হলেই কেবল এদের মাঝে ছাত্রসত্তা জাগ্রত হয়। আর বাকিটা সময় পড়ি পড়ি করেও এদের তেমন কিছুই পড়া হয়ে ওঠে না।
♦ বাড়তি টাকার জন্য বাবার কাছে মিথ্যা বলা, মিথ্যা অজুহাত দেওয়া এদের কাছে ডাল-ভাতের মতোই সহজ বিষয়।
♦ মেসের জন্য বাজার করতে গিয়ে পাঁচ-দশ টাকা নিজের পকেটে ভরতে এরা কখনোই ভুল করে না।
♦ একজন অন্যজনের পেস্ট, শ্যাম্পু, রেজার নিজের মনে করে ব্যবহার করে।
♦ তেলাপোকা, ছারপোকা, টিকটিকি হলো মেসরুমের নিয়মিত বাসিন্দা। এগুলোর সঙ্গে সখ্য করেই এদের থাকতে হয়।
♦ একজন সরল ছেলেও মেসে আসার পর বেশ কিছু গুণ অর্জন করে, যার অন্যতম হলো চাপাবাজি।
♦ এরা টিউশনি করে মোবাইল খরচ, হাত খরচের টাকা জোগাড় করে।
♦ প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে মেসের ভাড়া বাড়িয়ে দেয় মেসের মালিক। আর সেটা মাথা পেতে নিতে এরা বাধ্য থাকে।
♦ গ্যাঞ্জাম, চিল্লাচিল্লি, বেসুরো গানের শব্দের মধ্যেই এরা মনোযোগ সহকারে পড়তে পারে।
♦ থার্টিফার্স্ব নাইট, পহেলা বৈশাখ—এই অনুষ্ঠানগুলো এরা ঘটা করে পালন করে। মেসে এসব উৎসব উপলক্ষে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া হয়।
♦ গভীর রাতে মুড়ি পার্টি মেসের একটা অতি পরিচিত অনুষ্ঠান। চাঁদা তুলে এরা মুড়ি পার্টির আয়োজন করে।
♦ বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলার দিন এরা সব কাজ ফেলে টিভির সামনে বসে দলবেঁধে খেলা দেখে। বাংলাদেশের জয়ে এরা গলা ফাটায় আবার হারে অশ্রু ঝড়ায়।
♦ এরা বেশ আড্ডাপ্রিয় হয়। সময় পেলেই গিটার, হাঁড়ি, থালা নিয়ে গানের আসর জুড়ে দেয়।
♦ মেসের পাশের বাড়িগুলো এদের হট্টগোলে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায়ই মেস মালিককে নালিশ করে। তবুও এদের আনন্দ, হট্টগোল থেমে থাকে না।
♦ প্রেমিক, অতিপড়ুয়া, দেবদাস, কবি—এসব বিশেষ বৈশিষ্ট্যধারী ছেলে প্রতিটি মেসেই কমবেশি পাওয়া যায়।
♦ রং ফর্সাকারী ক্রিম, ফেসওয়াশ, হেয়ার জেল ইত্যাদি এদের রুমে পাওয়া যাবেই।
♦ মেসে থাকা ছেলেদের কাছে প্রায়ই সাইকেল দেখা যায়, বিশেষত যারা টিউশনি করে তাদের কাছে তো অবশ্যই।
শেষ কথা...
মেসজীবন অনেক কষ্টের। এখানে থাকা-খাওয়ার সমস্যা প্রকট। তা ছাড়া আপনজনদের ছেড়ে একা একা থাকতে হয়। তবুও মেসে থাকার আনন্দটাই অন্য রকম, রোমাঞ্চকর। এরা সংগ্রাম করে, কষ্ট করে বেঁচে থাকে। এ জন্য মেসে থাকা ছেলেরা দৃঢ়চিত্ত, সাহসী, সংগ্রামী ও বাস্তববাদী হয়।