

পিপাসা লাগলে পানির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কিন্তু যদি গরম কালে সুস্থ থাকতে চান, তাহলে শুধু পানি খেলে চলবে না। সেই সঙ্গে খেতে হবে আখের রসও। কেন? এই সময় ঘামের সঙ্গে শরীরে উপস্থিত নানা খনিজ, বিপুল পরিমাণে বেরিয়ে যায়, ফলে শরীর দুর্বল হতে শুরু করে।
প্রসঙ্গত, শরীরে খনিজের এই ঘটতি মেটাতে আখের রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। মাত্রাতিরিক্ত গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খনিজের ঘাটতি মিটিয়ে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে আখের রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়া গরমকালে নানা রোগের প্রকোপ খুব বৃদ্ধি পায়। স্কিন প্রবেলন তো আছেই, সেই সঙ্গে ডিহাইড্রেশন এবং সংক্রমণের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে এক গ্লাস আখের রস দারুন উপকারে লাগতে পারে। আখের রস ডায়াবেটিক রোগীরাও খেতে পারেন। এতে শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও অশঙ্কা থাকে না।
আর কী কী ভাবে আখের রস এই গরম কালে আমাদের সাহায্য করতে পারে? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।
১. শরীরে পানির মাত্রা স্বাভাবিক রাখে
অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে পানির ঘটতি দেখা দেওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। তাতে কোনও সমস্যা নেই। তবে বেশিক্ষণ যদি এমন ঘটতি থাকে, তাহলে ডিহাইড্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে আখের রস দারুন ভাবে কাজে আসে। আসলে শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রেখে নানা ধরনের রোগকে দূরে রাখতে এই পানীয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ইলেকট্রোলাইটসের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে
আখের রয়ে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম, আয়রণ এবং মেঙ্গানিজ। এই খনিজগুলি শরীরে ইলেকট্রোলাইটসের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৩. ক্লান্তি দূর করে
অতিরিক্ত ঘামের কারণে ক্লান্তি বোধ বেড়ে যাওয়াটা গরম কালে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এক্ষেত্রেও এক গ্লাস আখের রস আপনাকে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? আসলে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে খনিজ বেরিয়ে যাওয়ার কারণেই ক্লান্ত লাগে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা যে খনিজের ঘাটতি মেটাতে আখের রস দারুন ভাবে কাজে আসে। শুধু তাই নয়, পেশির শক্তি বাড়ানোর পাশপাশি এনার্জি বাড়াতেও এই পানীয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
৪. ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল করে
গরম কালে নানা কারণে বেশ কিছু ত্বকের রোগ খুব বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে স্কিনও খুব শুষ্ক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আখের রস দরুন কাজে আসতে পারে। আসলে এতে উপস্থিত আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের ঔজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশপাশি একাধিক ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতে দারুন কাজে আসে।
৫. লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
শরীর থেকে তখনই ক্ষতিকর সব টক্সিন বেরিয়ে যেতে পারে, যখন লিভার চাঙ্গা থাকে। আর এই কাজে দারুনভাবে সাহায্য করে আখের রস। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে লিভারকে সুস্থ রাখতে আকের রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো এই গরম কালে লিভার ফাংশন ঠিক রাখতে প্রতিদিন এক গ্লাস করে আখের রস খাওয়া মাস্ট!
৬. হজম ক্ষমতা বাড়ায়
অতিরিক্ত গরমের কারণে গরমকালে হজম ক্ষমতা বিগড়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সঙ্গী হয় গ্যাস আর অম্বল! আখের রসে উপস্থিত পটাশিয়ান হজম ক্ষমতার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো গরম কালে পেটকে ঠান্ডা রাখতে আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, স্টমাক ইফেকশন রোধেও আখের রস বেশ কাজে আসে।
৭. ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন রোধ করে
ডিহাইড্রেশনের কারণে গরম কালে ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। তাই তো এই সময় সুযোগ পেলেই আখের রস খাওয়া উচিত। কারণ অ্যালকালাইন প্রকৃতির এই পানীয়টি একদিকে যেমন এমন ধরনের সংক্রমমের প্রকোপ কমায়, তেমনি শরীরে জলের মাত্রা ঠিক রেখে এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।
৮. যে কোনও ধরনের সংক্রমণ কমায়
গরম কালে এবার থেকে আর সংক্রমণের ভয় থাকবে না, যদি সপ্তাহে তিনবার এক গ্লাস করে আখের রস খাওয়া যায় তো। কারণ যেমনটা আগেও বলেছি, এই পানীয়তে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ, যা সংক্রমণের প্রকোপ কমাতে দারুন কাজে দেয়।









