বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের হাতে অর্থ, প্রভাবিত করার ক্ষমতা সবই ছিল। কিন্তু মার্ক জাকারবার্গের কাছ থেকে শুরুর দিকে ফেসবুক কিনে নিতে পারেনি মাইক্রোসফট। তবে ফেসবুক কেনার যে চেষ্টা যে করেনি তা কিন্তু নয়! মাইক্রোসফটের সাবেক প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমার সিএনবিসি ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই ব্যর্থ প্রচেষ্টার কথা জানিয়েছেন।
বলমার বলেছেন, দুই হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে ফেসবুককে কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল মার্ক জাকারবার্গকে। কিন্তু তাঁর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জাকারবার্গ। এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার সেই সাহসকে সম্মান জানান বলমার।
মার্কিন লেখক ডেভিড কার্কপ্যাট্রিকের ‘দ্য ফেসবুক ইফেক্ট’ নামে একটি বইয়ে মাইক্রোসফটের ফেসবুক কেনার চেষ্টা সম্পর্কে বলা হয়েছে। বইটিতে ফেসবুকের ইতিহাস ও এর প্রভাব সম্পর্কেও বলা হয়েছে। কার্কপ্যাট্রিক লিখেছেন, ফেসবুকের মূল্যমান এক হাজার ৫০০ কোটি ডলার ধরে অল্প কিছু শেয়ার কেনে মাইক্রোসফট। অবশ্য, প্রতি ছয় মাস অন্তর ফেসবুকের পাঁচ শতাংশ কেনার সুযোগ ছিল। এতে পুরো ফেসবুক অধিগ্রহণ করতে মাইক্রোসফটের পাঁচ থেকে সাত বছর লাগত। কিন্তু মাইক্রোসফট তাতেও আগ্রহ দেখায়নি। ২০০৭ সালে মাইক্রোসফট কেবল ২৫ কোটি ডলার খরচ করে ফেসবুকের এক দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ার কেনে। ওই সময় কেনার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল গুগল। মাইক্রোসফটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে তারাও প্রতিযোগিতামূলক দাম হাঁকিয়েছিল। ফেসবুকে মাইক্রোসফটের ওই সামান্য বিনিয়োগটুকু অনেক বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই বলেন, প্রধান নির্বাহী হিসেবে স্টিভ বলমারের ওটাই ছিল শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষও মাইক্রোসফটের সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করায় গুগল আর ফেসবুক কিনতে পারেনি। গুগল নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট তৈরিতে কাজ শুরু করে। ২০০৭ সালে মাত্র ৩০০ জন কর্মীর ওয়েবসাইট ফেসবুকের বার্ষিক আয় ছিল ১০ কোটি ডলার থেকে ১৫ কোটি ডলারের মধ্যে। আর এখন মাসিক হিসাবে সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭০ কোটি পার হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মোবাইল থেকেই ১০০ কোটি ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করছেন। ২৭ জুলাই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের প্রান্তিক আয় ঘোষণার সময় এ তথ্য প্রকাশ করেছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট আয় হয়েছে ৬৪০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি।
তথ্যসূত্র: গ্যাজেটস নাউ