শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে পৃথক হামলা চালায় সন্ত্রাসী বন্দুকধারীরা। নারকীয় হামলায় তিন বাংলাদেশিসহ ৪৯ জনের নিহতের খবর দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও ৪ বাংলাদেশিসহ আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এদিকে অল্পের জন্য বেঁচে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। কিন্তু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে টাইগার শিবির। এদিকে নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৫২।
টেস্ট সিরিজ কাভার করতে যাওয়া ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইসামকে ফোন করেন আতঙ্কগ্রস্থ তামিম ইকবাল।
বলতে থাকেন, ‘ভাই এখানে গুলি চলছে, আমাদের বাঁচান’, ইসাম ভাবছিলেন তামিম বোধহয় মজা করছেন। কিন্তু তামিমের কণ্ঠে আতঙ্ক টের পেয়ে দৌড়ে ছুটে যান তারা। গিয়ে যা পরিস্থিতি দেখেছেন তা বর্ণনা করেছেন ক্রিকইনফোতে।
দুপুর ১টা: হ্যাগলি ওভালে ট্রেনিং করতে আসে বাংলাদেশ দল। কয়েকজন ক্রিকেটার মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় শেষে অনুশীলন শুরুর কথা ভাবেন।
দুপুর ১টা ২৭: বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমদুউল্লাহ রিয়াদ সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন। তিনি মসজিদে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়োয় ছিলেন কিন্তু তারপরও আরও ৯ মিনিট কথা বলেন।
দুপুর ১টা ৩৫: টিম এনালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখর, সাপোর্ট স্টাফ মোহাম্মদ সোহেল, ম্যানেজার খালেদ মাসুদ (মোট ১৭জন) খেলোয়াড়দের সঙ্গেই ছিলেন।
দুপুর ১টা ৫২: তামিম ইকবালের ফোন পান ইসাম। তামিম বলছিলেন ‘ভাই এখানে গুলি চলছে, আমাদের বাঁচান।’ ইসাম প্রথমে ভেবেছিলেন মজা করছেন তামিম। কিন্তু ঘটনার গুরুত্ব টের মিলে তামিমের পরের কথায়।
এ সময় তিনি জানান, ‘এখানে মসজিদে গুলি চলছে, পুলিশকে জানানো দরকার।’ তামিমের কথা শুনে দৌড়ে ছুটে যান তারা। এ সময় বেশ কিছু বাংলাদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
এ সময় মসজিদের কাছাকাছি গিয়ে তারা দেখতে পান রক্তারক্তি কাণ্ড। রক্তাক্ত পোশাকে বেরিয়ে আসছেন কেউ, কেউ করছেন চিৎকার। ততক্ষণে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। চলে এসেছে অ্যাম্বুলেন্স, বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তা।
আতঙ্কগ্রস্ত মানুষজন ছুটোছুটি করছে দ্বিবিগ্নিক। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদেরও ছিল এই হাল। নারকীয় এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না কেউই। এরপর ১৫ মিনিট উদভ্রান্তে মতো হেঁটে মাঠের কাছে আসেন তারা।
এই ১৫ মিনিট যেন ছিল ১৫ ঘণ্টার চেয়ে ধীর। দুপুর ২টা ৮ মিনিটে ক্রিকেটার, সাংবাদিক সবাই আশ্রয় নেন হেগলি ওভালের ড্রেসিং রুমে। পরে এখান থেকে তাদের উদ্ধার করে নিরাপদে হোটেলে নিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।