যেসব কারণে লোকে আপনার প্রতি বিরক্ত হন

লাইফ স্টাইল September 24, 2017 1,169
যেসব কারণে লোকে আপনার প্রতি বিরক্ত হন

কারো সঙ্গে হয়তো প্রথমবারের মতো দেখা করতে যাচ্ছেন। মনে মনে অনেক কিছুই ভাবেন- লোকটি কেমন হবে। পরে হয়তো উপলব্ধি করলেন যে লোকটি আসলেই আপাদমস্তক ভদ্রলোক।


বিজনেস ইনসাইডার গবেষণার মাধ্যমে বেশকিছু বৈশিষ্ট্য ও আচরণ খুঁজে বের করেছে যেগুলোর কারণে লোকে আপনাকে অপছন্দ করতে পারে। এটা অনলাইন ও ব্যক্তিগত উভয় ক্ষেত্রেই হতে পারে।


১. ফেসবুকে অতিমাত্রায় ছবি শেয়ার করা

অনেকই আছেন ফেসবুকে ছবি পোস্ট করতে পছন্দ করেন। নিজের মধুচন্দ্রিমা, ভাই-বোনদের নিয়ে কোনো বিশেষ দিনের উদযাপন, পোষা কুকুরের ছবি তুললেন। এরপর একদিন সবগুলো ছবি ফেসবুকে আপলোড করলেন।


এই কাজটি একদমই করা ঠিক নয়।


২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুকে অতিমাত্রায় ছবি পোস্ট করার কারণে বাস্তব জীবনে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে।


কারণ ঘনিষ্ট বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজন ছাড়া অন্য লোকেরা প্রতিনিয়ত ছবি পোস্ট করা পছন্দ নাও করতে পারে। কারণ ওই ছবিগুলোর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকে না।


বিশেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে অনেক ছবি থাকা সত্ত্বেও শুধু পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের ছবি আপলোড করার কারণে বন্ধুরা অখুশিও হতে পারে।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি শেয়ার করার সময় চিন্তা করতে হবে অন্যরা যারা দেখছেন বিষয়টা কীভাবে নিচ্ছেন। যদিও ভালো সম্পর্ক রাখার জন্য শেয়ারিংয়ের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, তবে অনেক সময় তা নাও হতে পারে।


২. ফেসবুক ফ্রেন্ড অনেক বেশি বা অনেক কম হলে

২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপর গবেষণা চালায়। সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তারা কোন ধরনের ফেসবুক প্রোফাইল মালিকদের পছন্দ করেন?


ফলাফলে দেখা যায়, যাদের ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টের সংখ্যা ৩০০ মধ্যে তাদেরকেই বন্ধু তালিকায় রাখতে পছন্দ করেন। পছন্দের মাত্রা কমতে থাকে যখন বন্ধুতালিকায় মাত্র শ’খানেক বন্ধু থাকে। বিপরীতে বন্ধুর সখ্যা ৩’শর বেশি হলেও জনপ্রিয়তা কমতে থাকে।


বেশি সংখ্যক বন্ধু থাকার কারণে ফেসবুকে মনোযোগ নিবদ্ধ করতে হয়। বন্ধুরা জনপ্রিয়তার চেয়ে হতাশায় ভোগেন।


অন্যদিকে, গবেষকরা বলছেন ১০০০ মধ্যে ফেসবুক বন্ধু রাখাই পছন্দনীয়।


যদিও ২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের ফেসবুকে বন্ধুর সংখ্যা ৩৩৮ জন।


গবেষণা অবশ্য এও বলা হয়েছে যে, অংশগ্রহণকারীরা ফেসবুকে ফ্রেন্ডলিস্টের সংখ্যা কমবেশির কারণে পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টির ব্যাপারে সচেতন নয়।


৩. প্রাথমিক পরিচয়েই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা

সাধারণত একে অন্যের প্রতি আস্থা অর্জনের পরই মানুষ পরস্পরকে পছন্দ করে। ভালো বন্ধুর কাছেই সাধারণত ব্যক্তিগত কথাবার্তা আলোচনা করা হয়। তবে পরিচয়ের বেশিদিন হয়নি এমন লোকের সঙ্গে পরিবার বা নিজের এমন কোনো কথা শেয়ার করা উচিত নয়, যেটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং আপনার গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়।


ইলিনয়স স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সুসান স্প্রেচার ২০১৩ সালের এক গবেষণায় পরামর্শ দিয়েছেন যে, ব্যক্তিগত শখ এবং শৈশবের প্রিয় স্মৃতিগুলো অন্যের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত। এতে করে আপনি অন্যের কাছে আরো পছন্দনীয় ও গ্রহণীয় হয়ে উঠবেন।


৪. নিজের সম্পর্কে না জানিয়ে অন্যের সম্পর্কে বেশি আগ্রহী হওয়া

২০১৩ সালের এক গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে যে, নিজের সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনার মাধ্যমেই অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তবে এটা পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে হতে হবে। লোকে ব্যক্তিগত বিষয় শেয়ার করলে আপনাকেও স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। দুই দিক থেকেই পারস্পরিক শেয়ারিংটা স্বতঃস্ফূর্ত হতে হবে। অন্যথায় লোকে আপনার প্রতি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে পারে।


৫. ক্লোজ প্রোফাইল ফটো ব্যবহার করা

অনেকে লিঙ্কডইন, ফেসবুক প্রোফাইলে ক্লোজড ফিচারের ছবি আপলোড করেন। এমনটা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।


ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র এক গবেষণাপত্রে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, ৪৫ সে.মি. দূর থেকে তোলা পোর্ট্রেট ছবি গ্রহণযোগ্যতা কম। আর ১৩৫ সে.মি. দূর থেকে তোলা ছবি আকর্ষণীয় ও উপযুক্ত বলে ধরা হয়।