ব্যস্ততার পরও সম্পর্কে থাকবে স্বাভাবিক ছন্দ

লাইফ স্টাইল September 22, 2017 3,052
ব্যস্ততার পরও সম্পর্কে থাকবে স্বাভাবিক ছন্দ

কর্মব্যস্ত এই জীবনে নিজের জন্য একটু সময় বের করাটাই অনেক কষ্টের। সেখানে প্রিয় মানুষটিকেও হয়ত সেভাবে সময় দেওয়া হয়ে উঠে না। কখনও দু'একটা কথা বলার ফুসরত মিললেও একসঙ্গে ঘণ্টাখানেক কাটানোর মত কারও কোন সময় নেই। এমনও হয়, স্বামী/স্ত্রী যখন গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন, আরেকজন তখন ঘুমের গভীরে। আর সকালে একজন ওঠার আগেই আরেকজন বেরিয়ে যান কাজে। এভাবে পেশা, সংসার... সব কিছুর চাপে যাঁতাকলে পিস্ট স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। এর ফলে তাদের মধ্যে দূরত্ব দিন দিন বাড়ছে। যা পরবর্তীতে রূপ নিচ্ছে বিচ্ছেদে। এক্ষেত্রে বিশেজ্ঞরা বলেন, একটা সম্পর্ক গড়তে যেমন সময় লাগে, ভাঙার বেলায় ঘটে তার উল্টোটা। আবার এমনও হয়, যখন বুঝে ওঠার আগেই ভাঙন শিকড় ছড়াতে থাকে সম্পর্কের ভিতে। তারপর যখন তার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়, ততদিনে সে ঝুরঝুরে। তবে যদি ছোটখাটো কয়েকটা বিষয়ে খেয়াল রাখেন, তাহলে দেখবেন ব্যস্ততার মধ্যে অনেক সমস্যা এড়াতে পারবেন। এতে আপনার সম্পর্কেও স্বাভাবিক ছন্দ বজায় থাকবে।


সম্পর্কে স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রাখতে করণীয়. . .


অফিসের কাজ অফিসেই সাড়ুন

আপনি যত গুরুত্বপূর্ণ পদেই চাকরি করুন না কেন, অফিসের কাজ অফিসেই সারুন। সারাদিন অফিসের ব্যস্ততার পর যখন বাড়ি ফিরছেন, তখন একটু খেয়াল করে শুধু পারিবারিক ব্যাপারেই কথা বলুন। এতে পারিবারিক নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সম্পর্কও স্বাভাবিক থাকবে।


বাসায় ফিরেই ফেসবুক নয়

বর্তমানে বহু সমস্যার মূলে ফোন বা ইন্টারনেট। ইদানিং আমরা এই দু’য়ের উপর যেভাবে নির্ভরশীল, তাতে অনেক কিছুর সঙ্গে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সম্পর্কও। তাই বাড়ি ফিরেই হোয়াট্‌স অ্যাপ বা ফেসবুকে স্ক্রল করা কিংবা মেসেজ করা থেকে বিরত থাকুন।


একবেলা একসঙ্গে খান

প্রতিদিন অন্তত একবার স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে খাওয়ার চেষ্টা করুন। যখন একসঙ্গে খাবেন, তখন পার্টনারের পেশা সম্পর্কে যতই অনাগ্রহী হোন, তার সারাদিন কেমন কাটল তা জানতে চান। নিজের সারা দিনের জার্নিও শেয়ার করুন। এতে যেমন একে অপরের কাজের জগৎ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকবেন, তেমনই কর্মক্ষেত্রে সমস্যা হলে তা বোঝার মানসিকতাও তৈরি হবে।


মাঝেমধ্যে উপহার দিন

যদি এমন হয়, পরপর বেশ কিছু দিন হয়ত আপনাদের মধ্যে ঠিকমতো কথা হয়নি। তখন একটা নির্দিষ্ট দিন আপনারা দু’জন বা সন্তান থাকলে তিনজনে একসঙ্গে কোথাও যান, যেখানে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব। এটা শুনতে বড্ড ‘নিয়মনিষ্ঠ’ লাগলেও, কার্যক্ষেত্রে কিন্তু ভাল ফল পাওয়া যায়। মাঝে মধ্যে হঠাৎ করে পার্টনারকে উপহার দিন। আপনি যে কেয়ার করেন, সেই বার্তাই পৌঁছাবে। এতে সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকবে।


সংসারের কাজ ভাগাভাগি করুন

সংসারের ছোট ছোট কাজ একসঙ্গে সারার চেষ্টা করুন। এতে যেমন একসঙ্গে সময় কাটানো হবে, তেমনই সংসারের প্রতি দু’জনেরই দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। সংসারের কাজ একা কারও উপর বর্তায় না। দু’জনের সংসারে কাজের ভাগীদারও হোন সমান ভাবে।


রোমান্টিকতার ছোঁয়া

একঘেয়ে জীবনে ব্রেক আনতে কখনও-সখনও পার্টনারকে রোম্যান্টিক মেসেজ বা স্মাইলিও পাঠাতে পারেন। এগুলোও সম্পর্কে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিতে আনতে সাহায্য করবে।


পরস্পরকে সম্মান করুন

দাম্পত্য সুখের জন্য একে অপরের পেশাকে সম্মান করাটাও খুব জরুরি। পার্টনারের পেশা আপনার ভাল না লাগতেই পারে। কিন্তু দিনের শেষে উপার্জনটা সংসারের জন্যই হচ্ছে।


ভালোলাগার দিকে খেয়াল রাখুন

দু’জনের কমন শখ থাকলে, যেমন যদি বই পড়তে ভালবাসেন, একে অপরকে নতুন বইয়ের সন্ধান দিন। সবসময় অন্যের ভাললাগার দিকে খেয়াল রাখুন। এটা জানা খুব জরুরি যে একে অপরকে ‘সময়’-এর চেয়ে মানুষ দামি আর কোন কিছু দিতে পারে না। যেহেতু ব্যস্ততার মধ্যে আলাদা করে জীবনসঙ্গীকে সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। সেক্ষেত্রে তার প্রতি একটু বিশেষ খেয়াল এবং ছোটখাট এই অভ্যাসগুলো কিন্তু সম্পর্কের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।