নাসিরউদ্দিন হোজ্জা সরকারি হাম্মামখানায় (গোসলখানা) গেছেন। জামা-কাপড় আর চেহারা সুরতে বোঝা যাচ্ছে গরিব মানুষ। হাম্মামখানার পরিচালক হোজ্জাকে চিনতো না- ফলে তেমন কোনো সেবা-সহযোগিতা কিছুই মিলল না। কিন্তু গোসল শেষে যাওয়ার সময়ে বকশিস হিসেবে লোকটির হাতে একটি স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে গেলেন হোজ্জা।
হাম্মাম রক্ষক তাজ্জব হয়ে তাকিয়ে রইল হোজ্জার গমন পথে।
কিছুদিন পর হোজ্জা ফের এসেছেন সেই হাম্মামখানায়। পরিচালক দেখতেই চিনে ফেলল তাকে।
তবে এবার হোজ্জার গায়ে দামি পোশাক-আশাক, মুখে কেতাদুরস্ত ভাব। লোকটি দৌঁড়ে এসে কুর্ণিশ করে দাঁড়াল। হাঁকডাক শুরু হলো।
কেউ নিয়ে এল সুগন্ধি, কেউ সুদৃশ্য গামলা, কেউ পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে, কেউ গোলাপ-বেলির পাঁপড়ি। পরিচালক নিজে হোজ্জাকে কাপড় ছাড়তে সাহায্য করল।
শাহানশাহী স্টাইলে গোসল শেষে হোজ্জা বেড়িয়ে এলেন, নিজ হাতে তার গা মুছিয়ে দিল হাম্মামের খাদেম, জুতা পরিয়ে দিল।
প্রায় যুবরাজের বেশে হাম্মামখানা ছেড়ে বের হতেই তার পিছু পিছু সাঙ্গপাঙ্গসহ রাস্তায় নেমে এল খাদেম সাহেব। হোজ্জা এবার দাঁড়ালেন এবং পকেট হাতড়ে একটা তামার মুদ্রা বের করে দিলেন হাম্মামওয়ালার হাতে।
হোজ্জার এমন আচরণে খুবই তাজ্জব বনে গেল লোকটি। মুখে কথা নেই, কিন্তু চরম বিস্ময় নিয়ে তাকাল তার দিকে।
মুচকি হেসে হোজ্জা বললেন: এটা হচ্ছে সেদিনের জন্য আর সেদিনেরটা ছিল আজকের জন্য, বুঝলে...