মানসিক অবসাদ হচ্ছে এমন এক ধরণের মানসিক রোগ যাতে মানুষেরা দীর্ঘ সময় ধরেই মনোকষ্টে ভোগেন। এতে পরিবর্তন ঘটে তাঁদের আচার-আচরণ, অনুভূতিতে। দৈনন্দিন জীবনে কাজকর্মেও ব্যাঘাত ঘটায়। সার্বিক ভাবে ভাল থাকা আর হয়ে ওঠে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক প্রজন্মের জীবনযাত্রার তাল অতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তাতে প্রভাব পড়ছে সার্বিক স্বাস্থ্যে। অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবার থেকে শুরু করে অনিয়মিত জীবনযাপনও এর জন্য দায়ী। মানসিক অবসাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে বেশ কয়েকটি অভ্যাসে পরিবর্তন ঘটানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা-
১. একসঙ্গে অতিরিক্ত খাওয়া: খিদে চেপে রেখে অসময়ে বেশি পরিমাণ খাওয়ার অভ্যাস বিপদ ডেকে আনছে অনেকের। এতে শরীরে যেমন মেদ জমার পাশাপাশি মনেও বিষাদের ভার চাপছে। ওজন বাড়ার দরুণ হীনমন্যতায় ভুগেন তাঁরা। তাতেও মানসিক ভাবে অবসাদ বাড়ে। অতএব নিয়ম মেনে পরিমিত খাওয়ার অভ্যাস করুন।
২. চাপের কাছে নতিস্বীকার করা: দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস বাড়ার ফলেও প্রভাব পড়ে মনোস্বাস্থ্যে। সামান্য স্ট্রেস ভাল হলেও অতিরিক্ত চাপে ভেঙে পড়েন অনেকেই। স্ট্রেস বাড়ায় শরীরের সেরোটনিন নামে এক রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ কম হয়। আর তাতে অবসাদ বাড়ে। কারণ, হ্যাপিনেস হরমোন নামে বেশি পরিচিত এই রাসায়নিক আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার পেছনেও অনেকাংশে দায়ি।
৩. ইন্টারনেট আসক্তি: কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভারসিটির এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মানসিক অবসাদ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। নেট দুনিয়ার আসক্তির ফলে প্রভাব পড়ছে দৈনন্দিন কাজকর্মে। ফলে সামাজিক পরিবেশ থেকেও সরে আসছেন তাঁরা।
৪. দিনের বেলা ঝিমোতে থাকা: মানসিক অবসাদের একটি অন্যতম কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাব। অবসাদগ্রস্ত মানুষেরা দিনের বেলাতেও ঝিমোতে থাকেন। এর পিছনে রয়েছে রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমোনো বা গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাস।
৫. শারীরিক কসরত না করা: কাজের চাপেই হোক বা অনীহার কারণে, শারীরিক কসরত না করলেও তাতে বাড়তে পারে মানসিক অবসাদ।
৬. তেল-মশলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া: অনেকেই জাঙ্ক ফুড বা অন্যান্য ফ্যাটি ফুড এড়িয়ে থাকতে পারেন না। হাই-ফ্যাট ডায়েটের ফলে আচার-আচরণেও বদল ঘটতে পারে। এমনকী মস্তিষ্কের প্রদাহও হতে পারে। তাতে বাড়তে পারে অবসাদ।